বর্তমান সরকার দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কিনা তা আগামী প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
মঙ্গলবার (০২ মার্চ) জাপার বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জিতেছে আর হেরেছে দেশের ভোটাররা। ভোট দিতে না পেরে ভোটাররা রাস্তায় কান্না করছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচন নিয়ে প্রহসন চলছে এর ধিক্কার জানাই। আমরা মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করবো। মানুষের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলনে প্রয়োজনে প্রাণ দেবো কিন্তু মাথা নত করবো না।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, নির্বাচনে ইভিএম মেশিনে শতভাগ ভোট পড়ছে, এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ইভিএমকে আওয়ামী ইভিএম-এ পরিণত করা হয়েছে। ইভিএম নয়, ইভিএম পরিচালনায় জড়িতদের পবির্তন করতে হবে। আওয়ামীতন্ত্র আর গণতন্ত্র এক সাথে চলতে পারে না। জাতীয় পার্টি মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনীতি করছে। গণমানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনে জাতীয় পার্টি কখনো মাথা নত করবে না। প্রহসণের নির্বাচন বন্ধ করতে আমাদের সংগ্রাম চলবে। ভোটের নামে সন্ত্রাস হচ্ছে, নৈরাজ্য হচ্ছে, কেন্দ্র দখল হচ্ছে, মানুষের প্রাণহানী ঘটছে- এটা বন্ধ করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে সন্ত্রাস, হানাহানি আর খুনোখুনি বন্ধ করে ডিজিটাল গেজেটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করুন। তাতে দেশ নৈরাজ্যকর অবস্থা থেকে মুক্তি পাবে। সৈয়দপুর পৌরনির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি। তারা সবাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও হয়েছে পুরোই উল্টো।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাসে মানুুষ কথা বলতে পারে না। গণমাধ্যম প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে পারছে না। এছাড়া যে আইনে মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় সে আইনের পরিবর্তন চাই আমরা।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সরকার পরিবর্তন হয় না কিন্তু আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করে নিজেরাই তাদের ভাবমুর্তি নষ্ট করেছে। জোর করে জাতীয় পার্টির বিজয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে সৈয়দপুর পৌর নির্বাচনে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব এটিইউ তাজ রহমান বলেন, প্রমাণ হয়েছে নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা কার্টুনের মত আচরণ করছে। আর পুলিশ প্রশানের আচরণ আওয়ামী লীগ কর্মীদের মত। এভাবে চলতে থাকলে সরকারি দল আর কোন নির্বাচনে প্রার্থী পাবে না।
প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক এইচএম আসিফ শাহরিয়ার বক্তব্য রাখেন।