জিয়াউর রহমান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আপত্তিকর: রিজভী

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 16:10:48

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে সকল কথা বলেছেন তা শুধু নজিরবিহীন নয়, আপত্তিকর, অরুচিকর বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কথা বাদই দিলাম একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেও তিনি এই ধরনের কথা বলতে পারেন বলে আমি মনে করি না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২৫ মার্চ যখন দেশবাসী রাস্তায় বেড়িকেড দিচ্ছেন তখন চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান গুলি করেছেন। কত বড় ইতিহাস বিকৃতকারি প্রধানমন্ত্রী তিনি?

মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আসলে চারিদিক থেকে এত ধিক্কার উঠেছে আলজাজিরায় এই সরকারের কুকীর্তি নিয়ে ধিক্কার, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যেসকল নেতৃবৃন্দ ছিলেন জাতীয় পর্যায়ে তাদের সন্তানরা যে সকল বই লিখছেন এবং শেখ হাসিনার ক্যাবিনেটে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন তারা যেসকল বই লিখছেন। সেখানে জিয়াউর রহমানকে যেভাবে মহিমান্বিত করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা ঘেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে তার যেসকল অবদান শেখ হাসিনা এগুলোকে ঢাকা দিতে পারেন না, আড়াল করতে পারেন না। ২৫ মার্চ জিয়াউর রহমানের ঘোষণা একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা। রাজনীতিবিদ, গবেষক সকলেই এটাকে শুধু স্বীকারই করেন না, তারা এটা শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করেন, শুধুমাত্র শেখ হাসিনা করেন না। ইতিহাস গবেষণা বিশেষ করে শেখ হাসিনার কেবিনেটের বিশেষ ব্যক্তিদেরও গবেষণায় এবং স্মৃতিচারণে মেজর রফিকুল ইসলামের বইতে, এ কে খন্দকারের বইতে স্পষ্টভাবে জিয়াউর রহমানের বিষয় উঠে এসেছে। সুতরাং শেখ হাসিনার তো কিছুই বলার নেই। তাই প্রতিদিন বানানো মিথ্যাচার এই কথাগুলো বলছেন।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, এখন সত্যি প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা চায়নি। তাদের নেতা বৃহত্তর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রীর পিতা। যারা যুদ্ধ শুরু করেছে, প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি এটার কারণেই তাদের ক্ষোভ। জিয়াউর রহমান জাঞ্জুয়াকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। সেই ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন যারা চট্টগ্রামে বেড়িকেড দিয়েছেন তাদের নাকি হত্যা করেছেন। জিয়াউর রহমানের শত্রুরাও একথা বলতে পারবেন না। যে ব্যক্তি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন তার প্রতি কিভাবে কলঙ্কের লেপন দিলেন। তাই বুঝতে হবে শেখ হাসিনারাই ছিলেন বৃহত্তর পাকিস্তানের পক্ষে। এজন্য যারা স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে গেলেন তাদের প্রতি চরম ক্ষোভ। এজন্য জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ থেকে প্রায় ২০ থেকে ২২ বছর আগে হাইকোর্টের যে অবজারভেশন প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে রং হেডেড পারসন সেটা আবারও পরিণত হলো তিনি মানসিক রোগী, মানসিক বেকারগ্রস্ত। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এটা প্রমাণিত হয় একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে এসমস্ত কথা কেউ বলতে পারে না। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই; বলেন রিজভী।

তিনি আরও বলেন, একদলীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রতিদিনের যে নির্যাতন সে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। সেখান থেকে কিন্তু কখনোই বিচ্যুত হয়নি। এই নির্যাতন কেন করতে হচ্ছে। এটা করতে হচ্ছে এ জন্য যে দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের ধারা চালু হলে পরে মানুষ সত্যি ইতিহাস নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে।বিএনপির কোন কর্মসূচি থাকুক বা না থাকুক কিন্তু নেতার্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা জেলার সহ-সভাপতি তমিজউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার অপরাধ এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় থাকে সেই কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে আমি তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর