সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সংগঠনের শক্তি অর্জন করা ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা নাই। তিনি বলেন, এখানে আমার লোক বানিয়ে কোন লাভ নাই। এটা প্রাইভেট কোম্পানি নয়, এটা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার আদর্শের একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। তাই আওয়ামী লীগের ভিতরে যে হাইব্রিডরা ঢুকে পড়েছে তাদেরকে চালুন চালে ঝেড়ে-মুছে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি তাঁর বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি জামায়াতের সকল পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়াতে ক্ষয়িঞ্চু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের ভুল রাজনীতির কারণে তারা রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়ে এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের পথ ধরে হেটে আবার তারা সাম্প্রদায়িকতাকে উসকানি দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে তারা আমার দেশের স্বাভাবিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাঙালি জাতির উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করতে চায়।
তিনি বলেন, আগামীকাল ২৬ মার্চ বাংলাদেশের সেই ঐতিহাসিক ক্ষণ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি। তাই সকল নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান নানক।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আগামীকাল প্রতিটি মসজিদে মসজিদে জুম্মাবাদ বিশেষ দোয়া হবে বলে জানান। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে মিলাদ-দোয়া হবে। শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া হবে। প্রত্যেক মসজিদে মসজিদে মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আগামীকাল দোয়া অনুষ্ঠান করবেন এবং দোয়ায় শরিক হবার আহ্বান জানান নানক।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন? আমাদের বলিষ্ট নেতা, আমাদের বিচক্ষণ নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং এগিয়ে যাব।
তিনি বলেন, সংগঠনের শক্তি অর্জন করা ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা নাই। আজকে মানুষের বুকের ভিতরে আহাজারিকে আমরা যারা নেতা আত্মপরিচয় দেই, তাদের সেই আহাজারি, সেই আমরা বলতে আমি শুধু কেন্দ্রকে বলি না, এই মহানগরের যে নেতৃত্ব আস্থা নিয়ে বসিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, প্রত্যেকটি ওয়ার্ড থেকে চালুন দিয়ে বেছে বেছে যারা এই আওয়ামী লীগের ভিতরে ঢুকে পড়েছে; সেই হাইব্রিডদেরকে ঝেঁড়ে-মুছে চালুন দিয়ে চেলে তাদেরকে বের করে দিতে হবে।
আমার লোক বানানোর কোন চেষ্টা করবেন না। এখানে আমার লোক কে? আজকে আমি প্রেসিডিয়ামের মেম্বার আছি, এই আমি যদি আগামীবার প্রেসিডিয়াম মেম্বার না থাকে তাহলে আমার কে কে থাকবেন, বলেন তো? কেউ থাকবে না? রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে সালামটাও হয়ত কেউ দেবেন না? এই উপলব্ধি থাকতে হবে। এখানে আমার লোক বানিয়ে কোন লাভ নাই। প্রাইভেট কোম্পানি নয় এটা, এটা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার আদর্শের একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান; এটিকে মনে রাখতে হবে।
সেই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে যারা দুঃসময়, দুর্দিনে নেতা ছিল, যারা দায়িত্ব পালন করেছে, তাদেরকে যোগ্যস্থানে বসানোর পবিত্র দায়িত্ব আমাদের। আর এই পবিত্র দায়িত্ব থেকে যদি দায়িত্বকে অবহেলা করেন, কার্পণ্যতা করেন, যেই করেন না কেন, তিনিও রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চিত্র এবং পাকিস্তান সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয় প্রান্তে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। সভা পরিচালনা করেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবির। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য রাখেন।