চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেকোন ইস্যুতে আইন শৃঙ্খলাকে বাহিনীকে অপব্যবহারের ফলে বারবার এ ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা যেন বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের বর্বরোচিত গুলিবর্ষণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শ্রমিকদের বুকে গুলি চালিয়ে হঠকারী মূলকভাবে শ্রমিক বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে পাঁচটি প্রাণ ঝরিয়েছে পুলিশ। এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে এখন এমন এক কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে যেখানে মানুষের কোন অধিকার নেই, যেখানে দাবি আদায়ের জন্য কোন আন্দোলন করা যাবে না কিংবা প্রতিবাদ করা যাবে না। এই সরকারের কাছে মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই, বরং বিপন্ন হয়েছে। জনগণের প্রতি গণবিচ্ছিন্ন সরকারের কোন দায়-দায়িত্ব নাই। সরকারের সকল আচরণই নিষ্ঠুর, অমানবিক ও গণবিরোধী। সরকারের ব্যর্থতা ও ভুল নীতির কারণেই সমাজে চরম নৈরাজ্য, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। ভোটারবিহীন সরকারের জবাবদিহিতা থাকেনা বলেই গোটা সরকারই আজ বেপরোয়া রুপ ধারণ করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সেই শ্রমিকদের বুকে গুলি চালানো কেবলমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসকদের পক্ষেই সম্ভব। যার বিকৃত প্রতিক্রিয়া সারাদেশে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। আজ (১৭ এপ্রিল) বাঁশখালীতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পাঁচজন শ্রমিককে হত্যা ও কমপক্ষে ৩০ জনকে গুরুতর আহত করার ঘটনা নিঃসন্দেহে দেশে বিরাজমান দু:শাসনেরই বহি:প্রকাশ। দেশে এখন সভ্যতা বিধ্বংসী অমানবিক শক্তির উত্থান ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল একই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে ঘিরে স্থানীয় জনসাধারণের ডাকা সমাবেশের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। আজ আবারও একই স্থানে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও পাঁচজন শ্রমিক হত্যার ঘটনা কলঙ্কজনক ইতিহাস হয়ে থাকবে। ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি ও পবিত্র রমজান মাসে বর্তমান নিষ্ঠুর সরকার মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে।