‘হেফাজতি মোল্লাদের গ্রেফতার মানে আলেম-ওলামা গ্রেফতার নয়’

বিবিধ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 11:45:32

হেফাজতে ইসলামের মোল্লারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে দাবি করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ বলেছে, এরা আলেম- ওলামা নয়, এমনকি এরা ধর্মপ্রচারকও না। এসব মোল্লাদের গ্রেফতার মানে গণহারে আলেম-ওলেমা গ্রেফতার নয়।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, বিএনপি, হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ‘সরকার গণহারে আলেম-ওলেমাদের গ্রেফতার করছে’ এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করছে জাসদ। জাসদ মনে করে, সহিংসতা-নাশকতা-জ্বালাও-পোড়াও-ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবের সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি অভিযোগে আছে।

সমগ্র দেশবাসীর চোখের সামনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ, হাটহাজারি মাদরাসাসহ কয়েকটি মাদরাসা থেকে এবং ফেসবুকে লাইভ ও ইউটিউব ব্যবহার করে এই হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা প্রকাশ্যে জ্বালাও-পোড়াও-সহিংসতা-নাশকতার উসকানি ও হকুম দিয়েছে। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হেফাজতি মোল্লারা প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল, এসপির কার্যালয়, পুলিশের থানাসহ সরকারি অফিস-আদালত-স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি, এম্বুলেন্সসহ সরকারি-বেসরকারি যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করেছে।

জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আইন সবার জন্য সমান। সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার হাতে নাতে প্রমাণ থাকার পরও অপরাধীকে গ্রেফতার করা যাবে না কেন? কওমি মাদরাসার পরিচালক, প্রিন্সিপাল, শিক্ষক নামধারী হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা কি দেশের সংবিধান-আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে? তারা বলেন, একজন কোরানে হাফেজ ফৌজদারি অপরাধ করলে কি তাকে গ্রেফতার করা যাবে না?

হেফাজতি মোল্লারা রাজনৈতিক মোল্লা। এরা আলেম, ওলামা, ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলামি দার্শনিক, ইসলামি পন্ডিত, ধর্মীয় নেতা না, এমনকি এরা ধর্মপ্রচারকও না। এরা রাজনীতি করে, এরা রাজনৈতিক মোল্লা।

বিবৃতিতে বিএনপির সমালোচনা করে বলা হয়, হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতারের বিরোধীতা করে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো বিএনপিই সংশোধন হয়নি, বদলায়নি। বিএনপি সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাত-আগুন সন্ত্রাসের রাজনৈতিক পথেই আছে এবং হেফাজত বিএনপির ভাড়াটে রাজনৈতিক খেলোয়াড়। বিএনপি ও হেফাজত আগুন সন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে অশান্তি-অস্থিতিশীলতা-অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি সরকার উৎখাতের দিবাস্বপ্ন দেখছে।

হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে যতই নাকে খত দিক, দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক না কেন এদের ছাড় দেওয়া হবে সরকার ও দেশের জন্য আত্মঘাতী। কারণ রাজনৈতিক মোল্লারা রেজিস্টার্ড বেঈমান ও বিশ্বাসঘতক। এরা পাকিস্তানের দালালি আর বাংলাদেশের বিরোধীতার রাজনীতি কোনো দিনই ছাড়বে না। বার বার প্রমাণ হয়েছে এরা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র-সংবিধান-বঙ্গবন্ধু-জাতীয় পতাকা-জাতীয় সঙ্গীত-মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতার বিরোধীতা করবে ১৯৭১ সালের মতই।

জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, শুধু সরকার ও প্রশাসনের উপর নির্ভর করে না থেকে সকল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মানবতাবাদী রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক মোল্লা এবং এদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ও পার্টনারদের বিরুদ্ধে মাঠে রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর