হেফাজতের দুর্গ ভাঙতে সংগঠন শক্তিশালীর দিকে নজর আ.লীগের

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 09:04:03

চট্টগ্রাম থেকে: হেফাজতে ইসলামের ঘাঁটি চট্টগ্রামের হাটহাজারী। সরকারকে নানা সময়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে হাটহাজারীর হুজুররা। সবশেষ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম। সেই তাণ্ডবে অনেক তাজা প্রাণ ঝড়ে যায়। তাই হেফাজতকে আর ছাড় নয় এবার রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। তবে সেক্ষেত্রে হেফাজত কোন লক্ষ্যবস্তু নয় মূল টার্গেট আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো শক্তিশালী করা। সেটা যদি করা যায় তাহলে এক ঢিলে দুই পাখা মারার সুযোগ নেবে আওয়ামী লীগ। একদিকে হেফাজত যেমন কোণঠাসা হবে তেমনি ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের শক্ত ভিত তৈরি হবে। তাই দলের সহযোগী সংগঠনকে চাঙ্গা করতে প্রতিটি ইউনিটের সভা করার টার্গেট নিয়ে সাংগঠনিক সফর শুরু করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

নিজের সাংগঠনিক জেলার কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বসে বলেন, হাটহাজারীতে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এমপি নাই, এটা একটা বড় সংকট। যে কারণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় নাই।

দীর্ঘদিন এমপি না থাকার কারণে নৌকার যে প্র্যাকটিসটা, আওয়ামী লীগের যে প্র্যাকটিসটা সেটা নাই। ফলে বিভিন্নভাবে অর্থাৎ সামাজিক সম্পর্কগুলো মোল্লা কেন্দ্রিক হয়ে গেছে, সেখানে মোল্লাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সামাজিকভাবে কওমি মাদরাসাগুলো সেখানে বেশি। একটা শুধু হাটহাজারী মাদরাসা নয়, কয়েকটা কওমি মাদরাসা রয়েছে। হুজুর কেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। এরা এখন আওয়ামী বিরোধী অবস্থান নিয়ে দেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বোঝাতে হচ্ছে, তাদের প্রস্তুত করতে হচ্ছে যে তারা হুজুর নয়, তারা ধর্মব্যবসায়ী।

সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন বলেন, আর একটা সমস্যা হলো দীর্ঘদিন ধরে সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন হয় না। সহযোগী সংগঠনগুলো স্থবির হয়ে আছে। মনে রাখতে হবে যে কোন সংগঠনের ফাইটিং ফোর্স হচ্ছে সহযোগী সংগঠনগুলো। আওয়ামী লীগেরও ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে, কিন্তু থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়নি । এধরনের সম্মেলন কেন্দ্রিক গ্যাপও আছে। থানা আওয়ামী লীগ আগামী ২০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে দিবে।

তিনি বলেন, আমার টার্গেট এই মাসের শেষে হাটহাজারী ড্রাইভ দিব। মূল কাজটা হচ্ছে হেফাজত ইস্যুর চাইতে আমরা যদি ওখানে আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারি, তাহলে হেফাজত এমনিতেই কোণঠাসা হয়ে যাবে। আমার টার্গেট হেফাজত নয়, আমার টার্গেট হচ্ছে আমার দল। আমার দলকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা এই মিটিং করেছি। পাশাপাশি আমাদের যারা এমপিরা আছে তাদেরকে একটু যোগাযোগ বাড়াতে বলছি কারণ তারা গেলে আমাদের কর্মীরা উৎসাহ পায়, উজ্জীবিত হবে, অনুপ্রাণিত হবে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা সম্মেলনও করতে পারছি না। সম্মেলন না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে এক ধরনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, যে আমার মত প্রকাশের জায়গাগুলো নাই। তাই আমাদের লক্ষ্য অক্টোবরের মধ্যে ইউনিট এবং ওয়ার্ড সভাগুলো করবো। এরপর নভেম্বরে থানা সম্মেলন, ডিসেম্বরে নেত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করবো। আমার হাতে তো জাদুর কাঠি নাই এভাবেই আগাতে চাই বলেন স্বপন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর