শিক্ষা কমিশন গঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি ফখরুলের

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 23:35:47

অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) বিকালে দলের আয়োজনে শিক্ষা বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সরকারের প্রতি বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, এই করোনার সময়ে এই যে ক্ষতিটা হয়েছে তা মারাত্মকভাবে। আজকে শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটা আমাদের অর্থনীতিকে, আমাদের রাজনীতিকে, আমাদের ভবিষ্যতকে একেবারে প্রভাবিত করছে। এজন্য একটা জাতীয় কমিশন গঠন করা দরকার। শিক্ষাবিদ, অভিভাবক, শিক্ষার্থী  তাদেরকে নিয়ে একটা জাতীয় কমিশন অবিলম্বে তৈরি করা প্রয়োজন এবং অবিলম্বে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরিকল্পনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া প্রয়োজন। শিফট করে, বিভিন্নরকম ক্যারিকুলাম প্রণয়ন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।

করোনা প্রকোপের পর থেকে অসংখ্য মানুষ যেভাবে বেকার হয়েছে ঠিক একইভাবে অসংখ্য শিক্ষকও বেকার হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে অসংখ্য শিক্ষক বেকার হয়ে গেছে, কর্মহীন হয়ে গেছে। সরকার সম্পূর্ণভাবে তাদের নেগলেট করেছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষক যারা কিন্ডার গার্ডেট চালাতেন, গ্রামেও কিন্তু কিন্ডান গার্ডেন চলে সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে।

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজেকে আমরা যদি সত্যিকার অর্থে সমস্যাগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা সত্যিকার অর্থে যদি শিক্ষিত জাতি নির্মাণ করতে চাই, সত্যিকার অর্থে জনগণের ভবিষ্যত আলোকিত করতে চাই তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই এই ভয়াবহ দানবকে সরাতে হবে জনগণকে সম্পৃক্ত করে। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।

বিএনপির উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯ বিপরযস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা-সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় মহাসংকটে জাতির ভবিষ্যত’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি বলতে চাই যে, সরকারের আন্তরিকতা অভাব, সরকারের এখানে দুরভিসন্ধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। এটা ক্ষতি। আগামী ২০ বছর এই ক্ষতি আমাদেরকে নিয়েই আমাদের এগুতে হবে।

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে অবিলম্বে শ্রেণি শিক্ষা চালুর দাবি তিনি বলেন, শ্রেণির শিক্ষার কোনো বিকল্প নাই। আইপি বা অনলাইনের মাধ্যমে যে শিক্ষার পাঠদান করার চেষ্টা করা হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, এটাতে ফলাফল ভালো নয়। সেই অতিদ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া উচিত। যেখানে সব কিছু খোলা, কলকারখানা খোলা, দোকান-পাট খোলা সেখানে আর কোনো যুক্তি নাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা।

স্লেভ ও ডাবল শিফট করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রেণি শিক্ষা চালু, উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে অনলাইন ও সরাসরি শ্রেণির শিক্ষার সমন্বয়ে ব্যবস্থা গ্রহন, শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত টিকা প্রদানের ব্যবস্থা, ড্রপ আউট দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রণোদণা ঘোষণা, যোগ্য, উপযুক্ত ও মেধাবী প্রজন্ম তৈরি করার জন্য যুগোপযুগী সিলেবাস প্রণয়ন এবং শিক্ষাখাতে দক্ষতা বৃদ্ধি করাসহ ৬ দফা প্রস্তাবও তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক খন্দকার মোশাররফ।

অভিভাবক ফোরামের পক্ষে অধ্যাপক কামরুল হাসান এবং এএনএম মাহিদ উদ্দিন ভুঁইয়া দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভাবনা ও সমস্যাগুলো তুলে ধরে বলেন, এভাবে যদি একটা শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয় এবং এভাবে যদি আমাদের অভিভাবকরা সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ে তাহলে ভবিষ্যতে আমরা যাদের পাবো তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করবেন সেটা ভাবতেই ঘা শিউরিয়ে উঠে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর