শেখ হাসিনার আমলে বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয় ছাড়িয়েছে

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 04:25:48

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সরকারের অর্জিত মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক অতিক্রম হয়। যা ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল। বঙ্গবন্ধু সরকারের ১৯৭৫ সালের মাথাপিছু আয়ের এই বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করতে বাংলাদেশের লেগেছে ৪৬ বছর। আর এই কাজটি করেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির আয়োজনে ‘মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের যুগান্তকারী সাফল্য: গবেষণা ফলাফল প্রকাশনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই গবেষণা ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণা ফলাফলে বলা হয়, ২০২১ সালের আগে একমাত্র জাতির পিতার সরকারের সময় অর্জিত মাথাপিছু আয় দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারের মাথাপিছু আয় চীনের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে ১০০ ডলার বেশি ছিল।

বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হার (৫৩.৮০%) শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য একটি রেকর্ড। ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলারে উন্নীত করে বাংলাদেশকে আবারও দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

এতে বলা হয়, জাতির পিতার সুদৃঢ় নেতৃত্ব, অসীম সাহসিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিনবছরে মাথাপিছু আয় প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার। জাতির পিতা ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয় ২৭৮ ডলারে উন্নীত করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিনবছরে কোনো দেশের মাথাপিছু আয় তিন গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার নজির পৃথিবীতে বিরল।

গবেষণাপত্রে দেখানো হয়, জাতির পিতার সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলার মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চ মার্ক ২০২১ সালের আগে বাংলাদেশের কোনো সরকার অতিক্রম করতে পারেনি। জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদের সরকারের মাথাপিছু আয় বঙ্গবন্ধুর সরকারের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে অনেক কম ছিল।

ওয়েবিনারে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশের সাইজ অব ইকোনমি ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার মাত্র। ২০০৬ সালে বিএনপির সময় আমাদের টোটাল জিডিপির সাইজ ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। সেই বাংলাদেশের জিডিপি আজ দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ কোটি টাকারও বেশি। মাথাপিছু আয়, যেটা বঙ্গবন্ধু রেখে গিয়েছিলেন ২৩৮ ডলার, সেটি এখন হয়েছে ২২৬০ বা ২২৩০ ডলার।

সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর সরকার যে উন্নয়ন শুরু করেছিলেন, সেটি তার মৃত্যুর পর থমকে গিয়েছিল। জনগণের রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই উন্নয়নের ধারা আবারও ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে ধারা নতুন গতি পায়। বঙ্গবন্ধু উন্নয়নের যে ধারা সূচনা করেছিলেন, তাতে বিরতি না পড়লে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে অনেক আগেই আরো উন্নত পর্যায়ে থাকত।

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, বঙ্গবন্ধু কীভাবে অর্থনীতির ভিত্তিটা স্থাপন করলেন, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি অর্থনীতি, যেটা একেবারেই বিধ্বস্ত ছিল। যেখানে কৃষি ও রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত ছিল, পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া শিল্প বন্ধ ছিল। বাংলাদেশি যে শিল্পগুলো ছিল, সেগুলোও চলছিল না। কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিল না।

এরকম একটি অবস্থা থেকে বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, তারপর শুরু হলো অগ্রগতি। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছেন মানুষকে কেন্দ্র করে। প্রথমে তিনি বলেছেন- দুঃখী ও বঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। সেই বঞ্চনার কথা, মুক্তির কথা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং উপকমিটির সদস্যসচিব ড. সেলিম মাহমুদ ৯পৃষ্ঠার গবেষণপত্রে এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আরও আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ প্রমুখ

এ সম্পর্কিত আরও খবর