দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, আর নির্বাচনও ঘনিয়ে এসেছে। আমি জানি না অন্যকোনো দল ক্ষমতায় আসলে কি হবে। তবে আগামীতে আওয়ামী লীগ পুননির্বাচিত না হলে দেশের উন্নয়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে।
রোববার (২৮ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর ৬০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘ডেস্টিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পার্লামেন্টারি ফর্ম অব ডেমোক্রাসিতে আছি। আগামীতে বাংলাদেশের মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে সক্ষম হব। আর যদি না দেয় তাহলেও আমাদের সবসময় একটা প্রচেষ্টা থাকবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। তারপরে কি হবে আমি বলতে পারছি না।’
বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু কৃষির ওপর নির্ভর না করে দেশে শিল্পায়ন যাতে হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি। খাদ্যের যোগানে কৃষির প্রয়োজন রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ, বেসরকারি খাতই পারে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে, উন্নত করতে।’
শিল্পকে বহুমুখী করায় তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দেশব্যাপী একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিনিয়োগের জন্য বহুমূখী পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা চলছে। ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। দেশের রফতানি আয় বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে ৮ দশমিক ৫ ভাগ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে সম্প্রসারিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা দরকার। আমি ব্যবসা বুঝি না। আমার কাজ ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া, সম্ভাবনাগুলোকে জাগিয়ে দেয়া।’
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস বলছে- বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। বাংলাদেশ ২০৫০ সালের মধ্যে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াকে অতিক্রম করে বিশ্বের ২৩ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। আমি চাই আপনারা এটা মাথায় রেখেই ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ডিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে ‘ভিশনারী লিডারশিপ’ এওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।