বেগম জিয়ার প্রাণের জন্য বিএনপিই বড় হুমকি: হানিফ

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 22:30:18

বেগম জিয়ার প্রাণের জন্য বিএনপিই এখন বড় হুমকি মন্তব্য বলে করেছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করে, আন্দোলন করে সরকার পতন করা যাবে না বুঝতে পেরে বিএনপি এখন বেগম জিয়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে আন্দোলন করতে চায়।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর ১নং ওয়ার্ড ইউনিট আওয়ামী লীগের ত্রি-বাষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, উন্নয়নের ফিরিস্তি দেখে বিএনপি এখন বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ঠিক আছে, কিন্তু তিনি আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত এটা আগে মানতে হবে। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত কয়েদি। দেশে সংবিধান আছে, আইন আছে। কারাবিধান যা আছে সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আলাদা আইনের সুযোগ নেই। আইন সকলের জন্য সমান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানবতা দেখিয়ে কারাবিধির বাইরে গিয়ে তাকে নির্বাহী ক্ষমতায় বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। জেলখানায় গৃহপরিচারিকা রাখার সুযোগ দিয়েছেন। দণ্ড স্থগিত রেখে তার চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছেন। পৃথিবীর কোথাও কয়েদিকে এমন সুযোগ দেওয়ার নজির নেই। আইনে পারিনি, প্রধানমন্ত্রী মানবতা দেখিয়ে চিকিৎসার সবরকম সুযোগ দিয়েছেন। বিএনপি নেতারা তাকে বাসায় নেওয়ার পর বললেন প্রধানমন্ত্রী মানবতার কাজ করেছেন অথচ এখন উল্টো তারা দাবি করছেন বিদেশে পাঠাতে হবে। কোন আইনে তিনি বিদেশ যাবেন?

হানিফ বলেন, এখন একটাই উপায় আছে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যদি দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমার মাধ্যমে দণ্ড মওকুফ হলে তিনি দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন। বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করবো, আপনারা সেটাতে কেন যাচ্ছেন না? সত্যিকার অর্থে যদি বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আপনাদের মায়া, দরদ থাকতো। তাহলে আপনাদের প্রথম কাজ ছিলো রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বেগম জিয়ার শারীরিক সুস্থতার জন্য বিএনপির মাথাব্যাথা নেই। হানিফ বলেন, তার সন্তানেরও মায়া নেই। তারেক রহমান তার অসুস্থ মাকে দেখতে আসবে না। কারণ তার কাছে মায়ের মমতার চেয়ে ক্ষমতার লোভটাই বেশি। বিএনপি চায়, খালেদা মারা যাক। দেশের ভেতর একটা অস্থিতিশীলতা করে, জ্বালাও-পোড়াও করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করা তাদের উদ্দেশ্য। একজন লন্ডনে বসে স্বপ্ন দেখেন, আর মির্জা ফখরুল প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখেন। এই দেশে এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আন্দোলন করে সরকার পতন ঘটানোর ক্ষমতা বিএনপির নেই। তাই মিথ্যাচার করে তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর উনার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ছিলেন, বাসায় আসার পর নেতা-কর্মীরা, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন। মির্জা ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করতে চাই, হঠাৎ করে স্লো পয়জনিং আসলো কেনো? নাকি আপনারা নতুন করে ষড়যন্ত্র করছেন?

হানিফ আরও বলেন, বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনগণের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ কোথায় ছিলো আর আজ কোথায় এসেছে। ৬০০ ডলারের নিচে মাথাপিছু আয়ে ছিলো। আজ ২৫০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। রফতানি ছিলো ৮ বিলিয়নের নিচে এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ বিলিয়ন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স ছিলো, আজ বাংলাদেশের রেমিটেন্স ৪৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে, কর্ণফুলী টানেল হচ্ছে, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু এসব বিএনপির চোখে পড়ে না।

এর আগে ত্রি-বাষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সালাউদ্দিন আহমেদ খোকা সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন লাভলুর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের এমপি হাবিব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান, মতিউর রহমান মতি, দফতর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পী, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরী, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শেখ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফছার উদ্দিন খান প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর