রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে কিনা- ‘জানে না' বিএনপি

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 14:30:52

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে নতুন কমিশন নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন তিনি। আগামী ২০ ডিসেম্বর শুরু হবে এ সংলাপ। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জানিয়েছে তারা রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিতে আগ্রহী। সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টিও সংলাপে বসতে রাজি হয়েছে।

তাই ২০ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এ সংলাপ শুরু হচ্ছে। পরে ধাপে ধাপে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

নতুন ইসি গঠন নিয়ে বেশকিছু দিন যাবত রাজনৈতিক অঙ্গনসহ নানা মহলে চলছে আলোচনা। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অংশ নেওয়া নিয়েও চলছে কানাঘুষা।

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপি যাবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারি না এজন্য যে আমরা কিছুই জানি না এই সম্পর্কে'।

আমন্ত্রণ পেলে যাবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুই জানি না'।

দলটির একাধিক শীর্ষ নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপি অংশ নিবে না।

তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি কিছু ভাবছে না। এই মুহূর্তে বিএনপির ভাবনা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা। আর নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির দাবি নিরেপক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচনকালীন নিরেপক্ষ সরকার হলে সেই সরকারই নিবার্চন কমিশন গঠন করবে। বর্তমান সরকারের অধীনে যে কমিশন হবে তা আওয়ামী লীগের কমিশন হবে। এই কমিশনের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রহীন সমাজে জবাবদিহিতা প্রতিটি পদে পদে বিঘ্নিত হয়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে এটা বিদ্যমান। বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসায় বিদেশে প্রেরণে সরকারের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি তার সর্বশেষ উদাহরণ। তাই দেশে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনের পথ পরিষ্কার করে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক ব্যবস্থা করে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে মানবাধিকার ও বিচার পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পালনকালে এটাই হতে পারে দেশবাসীর জন্য সর্বোত্তম প্রাপ্তি।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলকে সংলাপে ডাকলে বিএনপি তাতে অংশগ্রহণ করবে না, এটা স্পষ্ট এবং পরিষ্কার।

এদিকে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দেওয়া উচিত মনে করছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করার উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকলে সেখানে অবশ্যই যাওয়া উচিত হবে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের প্রয়োজন। আর সংবিধান অনুযায়ী অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করা উচিত।

সংবিধানে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের কথা থাকলেও কোনো সরকারই সেই পথে হাঁটেনি। সংবিধানের আরেকটি অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ক্ষমতা অনুযায়ী কমিশন গঠিত হয়ে আসছে। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি 'সার্চ কমিটি'র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর