ইসি গঠনে চারদফা প্রস্তাব: সংলাপে সুশীল সমাজকেও চায় তরিকত

, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 08:43:18

নির্বাচন কমিশন গঠনে চারদফা প্রস্তাব দেয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি’র সঙ্গে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সুশীল সমাজকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। একই সঙ্গে দলটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানিয়েছেন। এজন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি আইনের খসড়া তৈরি এবং সংসদে পাশ করার কথা বলেছে দলটি।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপ শেষ বেরিয়ে সংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির সময় শেষ হয়ে আসায় নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গত ২০ এই সংলাপ শুরু হয়েছে। ইসি গঠনে কোনো আইন না থাকায় সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগ হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নামের প্রস্তাব নিয়ে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করেন। সেই সার্চ কমিটি পরে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নামের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতিকে দেন। সেই নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেন। এবার ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে এই নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।

নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ (১)-এ নির্বাচন কমিশন আইনের কথা উল্লেখ থাকলেও বিগত কোনো সরকারই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।’

“কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে একটি সুনির্দিষ্ট আইনের প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। তাই বর্তমানে সময় স্বল্পতা হেতু ভবিষ্যতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি সময়পোযোগী আইন প্রণয় উদ্যোগ প্রত্যাশা করি।”

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের রীতি প্রচলিত আছে। এর সাথে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ঐক্যমত পোষণ করছে। তবে বিষয়টি সর্বজন গ্রহণযোগ্য ও বির্তকের উর্ধ্বে থাকার জন্য রাজনৈতিক দল ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথেও মতবিনিময় বা সংলাপের আহ্বান জানাই।

নির্বাচন কমিশনে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী বা তাদের পরিবারবর্গের কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ না দেয়ারও কথা সংলাপে বলেছে তরিকত ফেডারেশন।

হাইকোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে সাবেক একজন সচিবকে সদস্য সচিব, একজন শিক্ষক, একজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং একজন সাংবাদিক নিয়ে মোট ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করার কথা জানিয়ে নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী বলেন, পাঁচজনই যেন সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অল্প সময়েই যে সংবিধান দিয়ে গেছেন, সেখানেই আইনের কথা বলা আছে। অর্থাৎ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা।’

“যেহেতু সময় কম, সেহেতু সার্চ কমিটির মাধ্যমে করেন ঠিক আছে। তবে ভবিষ্যতে যতো দ্রুত সম্ভব আইন করা উচিত। এটা জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকারে আইনমন্ত্রীও বলেছেন আইন দরকার। আইন হয়ে গেলেও আর প্রশ্নের উদ্রেগ হয় না।”

তিনি বলেন, যেহেতু আইনের প্রক্রিয়ায় একটা আলাপ-আলোচনার ব্যাপার আছে সেহেতু মাননীয় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সেটি হচ্ছে আমাদের বক্তব্যকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। আইনের পক্ষে মতামত দিয়ে তিনি (রাষ্ট্রপতি) বলেছেন, যেহেতু এটার জন্য সময় দরকার এবং সময় নিয়ে করলেই ভালো।’

“সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে সরকার বা আমিও (রাষ্ট্রপতি) বসতে পারি। আলোচনা করে একটা খসড়া তৈরি করে সেটি সবাইকে দেখিয়ে সংসদে পাস হলো”, বলেন নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী।

সার্চ কমিটির মাধ্যমে এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি এমন কোনো ইঙ্গিত দিলেন কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উনি ইঙ্গিত না দিলেও আমি মনে করি সার্চ কমিটির মাধ্যমেই হতে যাচ্ছে।’

এর আগে বিকেল চার টায় নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী’‘র নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর