মনগড়া অভিযোগ করে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে ঐক্যফ্রন্ট

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 15:52:15

বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। 

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাথে সাক্ষাৎ করে এই অভিযোগ জানান। বৈঠকে নির্বাচন কশিমনার রফিকুল ইসলাম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সংবাদিকদের দিলীপ বড়ুয়া বলেন, এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের চেষ্টা করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন  জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবার প্রতিদিন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মনগড়া ও বানোয়াট অভিযোগ করে সংশ্লিষ্টদের মনোবল ভেঙে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। তারা যাতে নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারে।

তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে বক্তব্য রাখছে অথচ ঐক্যফ্রন্টের চেয়ারম্যান ড. কামাল হোসেন একজন আইনজ্ঞ হয়েও এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না। বিএনপি যে দাবিগুলো উত্থাপন করছে সেগুলো উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।

দিলীপ বড়ুয়া বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তারা তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। নির্বাচনের পরে যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর কোন ধরনের নির্যাতন না হয় এবং নির্বাচনে তারা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নিশ্চিতের আহবান জানিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে নির্বাচনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। প্রশাসনের রদবদল সম্পর্কিত বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিএনপির কথামতো যেন এ ধরনের রদবদল করা না হয়।

জোটের অপর নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। বিরোধী রাজনৈতিক জোটগুলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। এ ব্যাপারে কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। 

কমিশনকে দেয়া চিঠিতে তারা বলেন, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বানচালের অংশ হিসেবেই প্রতিদিন  অসত্য ও মনগড়া অভিযোগ ইসিতে নিয়ে আসছে বলে দাবি করেছে ১৪ দলীয় জোট।

লিখিত চিঠিতে তারা বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল ও জোটকে সংবিধাসেনর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইন বহি:র্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য কর্তব্য। অথচ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন একজন দণ্ডিত ও পলাতক আসামি হওয়ার পরও তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত কোন আসামি জাতীয় সংসদের সদস্য পদ প্রার্থীদের বাছাই করতে পারেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংবিধানের প্রতি চরম অবমাননা এবং রাষ্ট্রীয় বিধিবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তারেক রহমানের এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসির প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

১৪ দলের চিঠিতে যা আছে:-

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একের পর এক অভিযোগের বিপক্ষে মত দিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪ দল।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বেশ কিছু অসত্য, মনগড়, বেআইনি, প্রথাবিরোধী ও অযোক্তিক অভিযোগ করা হচ্ছে। যা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অন্তরায়। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্দেশ্য প্রণোদিত কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ইসিকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়াসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে দলটি।

দাবির মধ্যে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল ও জোটকে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং আইন বর্হিভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে যে, আদালতে সাজাপ্রাপ্ত দণ্ডিত পলাতক আসামি তারেক রহমান অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন।

সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত কোন আসামি দেশের সর্বোচ্চ আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান সংসদের সদস্যপদ প্রার্থীদের বাছাই করতে পারেন না। খ. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচনকালীন সময়ে বাক-স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা অপরিহার্য। কিন্তু বাক-স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে বাক্য-সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জনমনে ভীতি ও শঙ্কার সৃষ্টি করলে নির্বাচন পরিবেশ নষ্ট হবে। বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিপ্রায়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে গণমাধ্যমে লাগাতার মিথ্যাচার এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

১৪ দলের প্রতিনিধির মধ্যে ছিলেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মহমুদ চৌধুরী, গনতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, জেপির শেখ সহিদুর ইসলাম , জাসদের নাদের চৌধুরী প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর