‘কৃষিতে জিয়াউর রহমান-খালেদা ছাড়া কেউ ভূমিকা রাখেনি’

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 11:57:45

কৃষিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীকালে বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কেউ কার্যকর ভূমিকা রাখেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সেই সমস্ত কাজে হাত দেয়, যেখানে তাদের নিজস্ব মুনাফা হয়, কমিশন পায়।

মঙ্গলবার (১৭ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, চলতি বছর সুনামগঞ্জ জেলায় বাঁধ নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ ছিল ১২২ কোটি টাকা এবং গত ৫ বছরে এই টাকার পরিমাণ ছিল ৬২১ কোটি টাকা, যা বাঁধ রক্ষায় তেমন কোন কাজে আসেনি। বরং এই বরাদ্দকৃত টাকা ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকতারা এই টাকা হরিলুট করেছে। যে সমস্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা এতই দুর্বল যে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার পানির চাপ সামলাতে পারেনি।

'প্রতি বছর এভাবে বাঁধ নির্মাণের নামে হাওর অঞ্চলে সরকারি অর্থ লুটের মহোৎসব চলে। এর ফলে কৃষকরা হয় সর্বশান্ত, অপরদিকে সরকারি দলের লোকজন ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা হয় আঙুল ফুলে কলাগাছ।

তিনি বলেন, শুধু দেশের হাওর অঞ্চলই নয়, এই চিত্র দেশের সার্বিক কৃষি সেক্টরে। বর্তমান অবৈধ সরকারের আমলে সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আলু চাষিরা তাদের আলুর ন্যুনতম মূল্য না পেয়ে রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ জানানোর খবরও কেউ ভুলে যায়নি। এর আগে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার প্রতিবাদে পাকা ধানের জমিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

ফখরুল বলেন, দেশের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ এখনও সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষি আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য-বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি ও কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে তেমন কোন উদ্যোগ বা তৎপরতা নেই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রথম দিকে কৃষকদের জন্য কার্ডের ব্যবস্থা করেছে। সার দেওয়ার জন্য সেই কার্ডের ব্যবস্থা করলেও কৃষকদের নিকট কোন সার পৌঁছায়নি।

কৃষকদের দুর্দশা লাঘব ও শস্য নিরাপত্তা রক্ষায় কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

সুপারিশ সমূহ হলো- হাওড় রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ করতে হবে। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

বছর বছর বাঁধ নির্মাণ না করে সিমেন্ট ও বালু দিয়ে তৈরিকৃত ব্লক ফেলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনা সুদে বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঋণগ্রস্ত কৃষকের ঋণের সুদ মওকুফ এবং স্বাভাবিক অবস্থা না ফেরা পর্যন্ত ঋণের কিস্তি নেওয়া বন্ধ করতে হবে।

হাওর অঞ্চলে শস্য বিমা চালু করতে হবে।

হাওর অঞ্চলের কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য গণমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি,নাজিম উদ্দিন আলম ও মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর