বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলংকার মত হতে পারে: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 13:21:15

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলংকার মত হতে পারে। বাংলাদেশের সাথে শ্রীলংকার অনেক মিল আছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল মিলনায়তনে এরশাদের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণ করে, পর্যটন থেকে আয় করে আবার গার্মেন্টস শিল্প থেকেও আয় করে দুটি দেশ। করোনা বা ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে শ্রীলংকা দেউলিয়া হয়নি। শ্রীলংকায় প্রায় দশ বছর গৃহ যুদ্ধ চলেছে কিন্তু শ্রীলংকা তখনো দেউলিয়া হয়নি। দেউলিয়া হঢেছে বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে।

তিনি বলেন, আমরা যে বাজেট করছি তাও ঋণ নির্ভর। তাই পরিচালন ব্যায় কমাতে বলেছি সরকারকে কিন্তু কোন উদ্যোগ নেই। আবার কারনে-অকারেন ফুর্তি করতে ব্যায় হচ্ছে হাজার কোটি টাকা। গত বছরও পুরো ট্যাক্স আদায় করতে পারেনি সরকার কিন্তু এবার সাধারণ মানুষ ট্যাক্স দিতে না পারলে অবস্থা আরো খারাপ হবে। বিদেশী ঋণ নিয়ে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। যখন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে তখন দেশের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, যদি ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে কোন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় আর সেখান থেকে প্রতিদিন ১ কোটি টাকা হারে বছরে ৩৬৫ কোটি টাকা আয় হয় তাহলে শুধু আসল পরিশোধ করতে ৯০ বছর লেগে যাবে। আবার সুদের টাকাও পরিশোধ করতে হবে। সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলংকা দেউলিয়া হয়ে গেছে। ঋণ নির্ভরতার কারনে দেশের ব্যাংকে টাকা নেই। পরিচালন ব্যায় না কমালে ব্যাংক থেকে ঋণ করে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। এ কারনেই দেশের অবস্থা শ্রীলংকার মত হতে পারে।

তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে দেশে লুটপাট চলছে। প্রতি বছর দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এতদিন সরকার টাকা পাচারের কথা স্বীকার করেনি। এখন ট্যাক্সের বিনিময়ে অবৈধ পন্থায় অর্জিত পাচার হওয়া হাজার কোটি টাকা বৈধ করার পন্থা বের করেছে সরকার। এমন নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। ট্যাক্স দিলেই যদি অপরাধ মাফ হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে খুন ও ডাকাতিও ট্যাক্সের মাধ্যমে বৈধতা পেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, এরশাদের নামে রাজনৈতিক হত্যার অপবাদ দেয়া হয়। জীবিত অবস্থায় এরশাদ নিহত নুর হোসেন সহ তাঁর শাসনামলে সংগঠিত সকল হত্যার তদন্ত ও বিচার চেয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোন হত্যার তদন্ত করেনি। নুর হোসেন সহ ঐ সময়ের সকল হত্যাকান্ডের তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। মিথ্যাচারের রাজনীতি আর দেখতে চায় না দেশের মানুষ। দেশের মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নেই দেশে।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফকরুল ইমাম এমপি, সুনিল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, এড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূইঁয়া, নাজমা আকতার এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, জহিরুল আলম রুবেল, নাজনীন সুলতানা, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, ইয়াহ ইয়া চৌধুরী এহিয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, বেলাল হোসেন প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর