চাঙ্গা বিএনপি তৃণমূল, দুশ্চিন্তায় কেন্দ্র

বিএনপি, রাজনীতি

মহিউদ্দিন আহমেদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 15:39:00

আগস্ট মাস জুড়ে বিএনপি রাজধানী তো বটেই সারাদেশে যতগুলো সমাবেশ করেছে তার অধিকাংশ জায়গায় বিপুল লোকসমাগম লক্ষ্য করা গেছে। সেই ধারা সেপ্টেম্বরে এসেও অব্যাহত ছিল। এসব সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেট দুনিয়ায় চাউর হতেই সেগুলো মোটামুটি ভাইরাল করে তোলে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে নিজেদের চাঙ্গা মনোভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় তাদেরকে। বিএনপি দাবি করছে, বর্তমানের চলমান আন্দোলনে বিএনপি দেশবাসীর কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে।

বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা জেগে উঠলেও আছে শংঙ্কা। সমাবেশ ও কর্মসূচিকে ঘিরে বিএনপি দেশের বহু জায়গায় সরকার এবং সরকার দলীয় লোকজনের আক্রমণের শিকার হয়েছে। মামলার কারণে বিএনপির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নেতাকর্মীদেরকে বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার আতঙ্ক তো আছেই। এমতবস্থায় দলীয় নেতাকর্মীদেরকে বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়ে আগামীর আন্দোলন সংগ্রাম কতটা বেগবান করা যাবে সেই দুশ্চিন্তা ভর করেছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে। যদিও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দমন-পীড়নে বিএনপিকে দমানো যাবে না। এত নির্যাতন, এত নিপীড়ন, এত হত্যা, এত গুম-খুনের পরও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসাবশেষ থেকে জেগে উঠছে।

বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল টিপু বার্তা২৪.কমের কাছে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩ জন। প্রায় অর্ধশতাধিক জায়গায় হামলা হয়েছে। শুধু পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী। গ্রেফতার হয়েছে ৩ শতাধিক। আর মামলার আসামি করা হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। অথচ আমাদের প্রতিটি কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ।

দফতরে সংযুক্ত বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, সরকার মূলত ভীতি সৃষ্টির জন্য বারবার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালাচ্ছে। এমনকি আমাদের নেতাকর্মীদেরকে গুলি করে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করছে না। যেখানেই বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে দেখছে সেখানেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাক হানাদারদের মত ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এতে আমাদের পথচলা কঠিন হলেও থেমে যাবো না। আমরা আন্দোলনের মাঠেই থাকবো।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান যিনি নিজেও টাঙ্গাইলের সফিপুরে আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আগস্ট ও সেপ্টম্বরের প্রথম দিকে বিএনপির সভা ও সমাবেশের প্রমাণ হয়েছে বিএনপির পাশে জনগণ আছে। এতে করে সরকারের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই আতঙ্ক থেকেই সরকার হামলা, মামলা ও নিষ্ঠুরতার আশ্রয় নিয়েছে। তবে এসব করে; এমনকি আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেও বিএনপিকে দমানো যাবে না। আন্দোলন থামানো যাবে না। যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার ফিরানো না যায় ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। রক্ত দিচ্ছি এবং রক্ত দিবো কিন্তু আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসবো না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর