মিয়ানমার দুই দেশের তিক্তকর সম্পর্ককে গভীর করে তুলছে: রওশন এরশাদ

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-29 01:58:23

মিয়ানমার রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদমনের নামে যে গোলাবারুদ ও কামান ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বেশ কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ছে। যা আর্ন্তজাতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন এবং দুই দেশেরতিক্তকর সম্পর্ক আরো গভীর করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয়নেতা ও জাতীয় পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক বেগম রওশন এরশাদ।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছেন।

বিরোধী দলী নেতা আরো বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও কূটনৈতিক মহলদীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এই সংকটকে যদি একটি দ্বিপাক্ষিক বাস্তব সম্মত পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান করতে পারতেন, তাহলে আজ হয়তো নতুন করে ফের সংকট তৈরি হতো না। এতে মন্ত্রনালয় ও কূটনীতিকদের অদক্ষতা; সমস্যা সমাধানে চরম ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছে। তাই অনতিবিলম্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বিপাক্ষিকভাবে অথবা চীন, ভারত ও সৌদিআরবের মধ্যস্থতায় ত্রি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

মায়ানমারের সাম্প্রতিক আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, গত ৪০ বছর ধরে রোহিঙ্গা ইস্যুটি একটি তিক্তকর বিষয় হিসেবে ঝুলে আছে। ১৯৭৭ সাল থেকে দীর্ঘদিন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে দেশচ্যুত করে আসছে। ২০১৭ সালে একসঙ্গে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে হত্যা, ধর্ষণ ও নানা কায়দায় অত্যাচারচালিয়ে বাস্তুচ্যুত করে বাংলাদেশের ভূমিতে ঠেলে দেয়। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা গোষ্ঠিকে দেশের মাটিতে অবস্থানের সুযোগ করে দেন। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি বাংলাদেশে অবস্থানের কারণে কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় জনজীবন ও প্রাণ-প্রকৃতির বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। অতি সম্প্রতি তাদের বর্তমানে সীমান্তে যে ভয়াবহ পরিবেশ বিরাজ করছে, আমাদের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক পাহারার মাধ্যমে জনগণের জান-মাল রক্ষা করছেন তার জন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। অতীতে আমাদের সেনাবাহিনী যেভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবদী গোষ্ঠিকে দৃঢ়তার সঙ্গে দমনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ঐক্য-সংহতি রক্ষা করেছেন, তাদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং তৎকালীন সময়ে যারা শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা।

তিনি মিয়ানমারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, যদি কূটনীতিক মধ্যস্থতায় এর সমাধান না করেন, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে কোনো ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃঢ় এবং বদ্ধপরিকর।

আমি আশা করছি, বাংলাদেশ সরকার অনতিবিলম্বে দ্বি-পাক্ষিক ও ত্রি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবে এবং মিয়ানমার উক্ত কূটনৈতিক উদ্যোগে একটি ইতিবাচক সাড়া দিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের পথে এগিয়ে আসবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে। যাতে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধান কার্যকরভাবে সম্পন্ন হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর