বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফা মানুষকে মন ভোলানো গান: নানক

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

মো. আরমান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 23:18:33

বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফা প্রস্তাব মানুষকে মন ভোলানো গান শোনানো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বলেন, বিএনপি নামক দলটি এখনো জামাতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা, সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী দলগুলোর সঙ্গে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তাদের কাছ থেকে এ কথাগুলো বলা মানে মানুষকে মন ভোলানো গান শোনানো। কাজেই এই কথাগুলো তাদের মুখে শোভা পায় না।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ধানমন্ডি ৩/১ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য বিএনপির ২৭ দফার প্রস্তাবের দৃষ্টি আকষণ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি যে ২৭টি প্রস্তাবনা দিয়েছে সেটি রাষ্ট্র মেরামত বা রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের কথা আগেও বলেছে। বিএনপির সার্বিক এবং প্রিভিয়াস পলিটিক্যাল ক্যারেক্টার কোনটাই কিন্তু তাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবের সম্পর্কযুক্ত নয়। তারা এ কথাগুলো বলেছে কিভাবে বাস্তবায়ন করবে তারাই জানে। বিএনপি নামক দলটির চেয়ারপারসন দণ্ডিত আসামি হওয়ার কারণে তিনি কারারুদ্ধ হয়ে বাসায় আছেন। আর এখন যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উনিও দণ্ডিত একজন মানুষ, সে দণ্ডিত মানুষটি লন্ডনে বসে নির্দেশনা দিচ্ছে দেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থার দিকে নিতে চাই।

দলের ২২তম সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের কি নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে, আওয়ামী লীগের কাছে এই সম্মেলন, কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অথবা ২৩ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। কাজেই সেই নির্বাচন লক্ষ্য থাকবে এবং সেই লক্ষ্য ও প্রত্যয় হল আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো। কাজেই সেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এবারের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি পদের বিষয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিষয়টা খুব পরিষ্কার, সেটা হল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি নিশ্চিত যে শেখ হাসিনাই আসবেন, শেখ হাসিনাই থাকবেন সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের দাবি। এরপরও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মানেই হল নতুন নতুন চমক সৃষ্টি, নতুনত্ব দেয়া। আওয়ামী লীগের খুব দুঃসময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন শেখ হাসিনা। দায়িত্ব পালন করছেন আজ ৪২ বছর। ৪২ বছর যাবৎ যিনি দলের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি এই দলের নাড়িনক্ষত্র জানেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কাউন্সিল হবে সেই কাউন্সিলে নেতৃত্বে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন এ সমস্ত কিছু নির্ভর করবে শেখ হাসিনার ওপরে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যারা বিদ্রোহী ছিল তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন, এদের ফিরে আসার যে প্রক্রিয়া সেটি কিভাবে হচ্ছে? এতে বিদ্রোহীরা উৎসাহিত হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যারা বিদ্রোহী বা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে, শুধু তাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। অপ্রিয় সত্য কথা একটা বিরাট বিদ্রোহী অংশ অনেক জায়গায় জয়লাভ করেছে।

ত্যাগীদের মূল্যায়নের কোন সুযোগ থাকছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, দেখেন আওয়ামী লীগ তার তৃণমূল থেকেই সম্মেলন সম্পন্ন করে আজকে জাতীয় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তো আমাদের ধারণা শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল, যত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মী যারা আছেন তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী দলে মূল্যায়ন এবং স্থান দেয়া হবে । আমরা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, উপজেলা, জেলা সম্মেলনগুলোতে আমরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছি এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে। তারপরও আমাদের যে কোন ভুলত্রুটি হবে না এমন কথা নেই, আমরা ফেরেস্তা নই। আগামী কাউন্সিলে আমরা এই মানুষগুলোকে চাই। যে মানুষগুলো আমাদের দুঃসময়, দুর্দিনে ত্যাগ তিতিক্ষা করেছে হয়তো অভিমান করে দূরে সরে আছে,আমরা সেই অভিমানী মানুষগুলোকে দলের মূল স্রোতের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই।

২৪ ডিসেম্বরে সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি আসবে তাদের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর