বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। পেয়েছেন তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। এনিয়ে গত তিনদিন কোনো কথা বলেননি বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোডস্থ সেরনিয়াবাত ভবনে উপস্থিত বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ, শ্রমিকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে মতবিনিময় সভায় সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তার সিদ্ধান্ত আমার বাবা মাথা পেতে নিয়েছেন। আমিও নিয়েছি।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, এতে কারও কোনো সন্দেহ আছে? এসময় সামনে থাকা সবাই সমস্বরে বলেন, না সন্দেহ নেই। বিষয় হচ্ছে গিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আমার চাচাকে। আমরা এমন কোন কাজ করবো না, যাতে মাঝখান দিয়ে অন্য লোকজন এটার ফয়দা নেয়। যারা লাফালাফি করতাছে, সুবিধাভোগী লোকজন এটা করবেই, আর এটা স্বাভাবিকও। মূলত অপেক্ষা করছি বাবা (জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ-এমপি) জেলা ও মহানগরের বর্ধিত সভার মিটিং ডাকবেন, সেখানে আমি একসাথে আসবো।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সবার সাথে কথা বললাম এই কারণে, যাতে সবাই বিষয়টি ক্লিয়ার থাকেন যে- এখানে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই, জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধন্ত।
উপস্থিত সবাইকে অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছ জানিয়ে তিনি বলেন, সুযোগ পেয়েছি এবার বাবার সাথে ঈদ পালনের, তাই বাবার কাছে থেকে গেলাম। বিগত বছরগুলোতে আপনাদের সাথে করেছি, এবার বাবার সাথে করি। কেউ মনক্ষুণ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই, রাজনীতি একদিনের না। আর নমিনেশন পাইছে আমার চাচা, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের সন্তান। রাজনীতি আপনারা করেন এবং ভালো বোঝেনও এখানে কাউকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। শান্ত বরিশালকে শান্ত রাখতে হবে। অশান্ত করার কোনো সুযোগ নাই। সবাই একতাবদ্ধ থাকেন, সামনে নির্বাচন আমাদের জয়লাভ করতে হবে। এটার ওপর নির্ভর করে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। তাই নৌকা মার্কাকে জয় লাভ করাতে হবে। আমার চাচা নির্বাচন করবে, আমরা তার নির্বাচন উঠাইয়া দিবো, সেজন্য যেখানে যা করা লাগে আমরা করবো। কেউ মনক্ষুণ্ন হবেন না, আমরা সংগঠন করতে এসেছি এখানে অনেক দূর যাওয়ার আছে। আমি মনক্ষুণ্ন না, রাজনীতি করি নেত্রীর জন্য।
সভায় মহানগরে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমরা সবাই মিলে তা বাস্তবায়ন করবো।
এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান রিন্টু, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন আমেনা বেগমের ছোট ছেলে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বর্ষীয়ান নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই এবং বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচা। তিনি আওয়ামী যুবলীগের সদস্য।