নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে সাতক্ষীরায় জাগ্রত আওয়ামী লীগ

বিএনপি, রাজনীতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-08-11 02:35:52

সাতক্ষীরায় জাগ্রত আওয়ামী লীগ। নৌকার পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন দলের সবাই। দলীয় কোন্দলও অনেকটা মিটে গেছে। একই মঞ্চে একই সুরে গাইছেন নৌকার গান। কিছুদিন আগেও যে নেতারা একে অন্যের মুখ দেখতেন না তারাও এখন নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করার লক্ষ্যে এক সঙ্গে মাঠে নেমেছেন।

সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা-১(তালা-কলারোয়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে ভেঙে পড়েছিল দলটির চেইন অব কমান্ড। কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল বেশ কয়েক বছর ধরে।

৯ ডিসেম্বরের পর সে দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে। এখন এ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লালটুর মধ্যে আর কোন দ্বন্দ্ব নেই। নৌকার মঞ্চে তারা একই সাথে কাজ করছেন কোমর বেঁধে। একই অবস্থা তালা উপজেলা আওয়ামী লীগেও। তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম ছিলেন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে মিশে দলকে করেছেন শক্তিশালী। এ জন্য তিনি আশাবাদী ছিলেন মনোনয়ন পাবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন তালিকা থেকে ছিটকে পড়েন। তালা-কলারোয়া আসনে নৌকার টিকিট পান ওয়ার্কার্স পার্টির এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। মুস্তফা লুৎফুল্লাহ নৌকার টিকিট পাবার পর তালা উপজেলার সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ নূরুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ সাধু ও শেখ নূরুল ইসলামের সমর্থকরা আওয়ামী লীগের যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। এতে করে মহাজোটের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্কে ফাটল ধরে। বর্তমানে সে ফাটল আর নেই। এখন সবাই নৌকার পক্ষে।

এদিকে, সাতক্ষীরা সদর আসনেও আওয়ামী লীগের অন্ত:দ্বন্দ্বের লক্ষণ প্রকাশ্যে রূপ নিয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে আসছিল। গত রমজান মাসে জেলা প্রশাসনের সৌজন্যে ইফতার পার্টিতেও কেউ কারো মুখ দেখেননি নেতারা।

গত শারদীয়া দুর্গোৎসবের সম্প্রীতির সেতুবন্ধনেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়ে বসেন এক জনপ্রতিনিধি। জেলার সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। আওয়ামী দুই পক্ষের মধ্যে অসহনীয় আচরণ ফুটে ওঠে। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সাতক্ষীরা নিউমার্কেটের সামনে এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ হয় জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্না গ্রুপের। তাতে যুবলীগ নেতা আব্দুল মান্নান বেশ কিছুদিন জেলও খেটেছেন। বর্তমানে সে অবস্থার অবসান হয়েছে। এখন সব নেতাই উঠছেন একই মঞ্চে। চাচ্ছেন নৌকা প্রতীকে ভোট। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ নেই। জেগে উঠেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর এ দুই নেতার কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা। বর্তমানে সে পরিস্থতি আর নেই। এখন সবাই দন্দ ভুলে একসাথে নৌকা প্রতীক বিজয়ী করতে কোমরবেঁধে মাঠে নেমেছেন।

সাতক্ষীরা-৪ আসনে শ্যামনগর উপজেলায় কয়েক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে নেতা কর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আতাউল হক দোলন মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও তিনি নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন শুরু থেকেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি এসএম জগলুল হায়দার সকলের সাথে নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে নৌকা বিজয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগে কোন বিভেদ নেই। নৌকার পক্ষেই সবাই মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য নৌকা বিজয় নিশ্চিত করতে এখন জাগ্রত আওয়ামী লীগ।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগে সামান্য রেষারেষি থাকলেও এখন আর তা নেই। সবাই এখন নৌকার কর্মী। নৌকা জিতলে আওয়ামী থাকবে। তা না হলে বিএনপি জামায়াত রক্তে রঞ্জিত করবে সাতক্ষীরার শ্যামল মাটি। তাই সবাই নৌকার জন্য একসাথে মাঠে নেমেছি। এতে নেতাকর্মীরা জেগে উঠেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর