বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেছেন, বেগম খালেদো জিয়া বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। যিনি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন। তিনি কখনো কারো সাথে আপোষ করেননি। সবাই তাকে দেশের গণতন্ত্রের মা হিসেবে চিহিৃত করেছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনা এরশাদের সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়েছিল। অথচ বলে বেড়ান তিনি নাকি আন্দোলন করেছেন। ওবায়দুল কাদের যদি প্রতি সপ্তাহে সিঙ্গাপুর যেতে পারে, বেগম খালেদা জিয়া কেন যেতে পারবে না। ম্যাডামের কিছু হলে সারা বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে। সরকার বুঝতে পারছেন না? আপনারা বুঝবেন না। কারণ বিভিন্ন বাহিনী নিয়ে আছেন। আরে আন্দোলনের জোয়ারে এই বাহিনী এক মিনিটের মধ্যে কোথায় চলে যাবে টেরও পাবেন না।
রোববার (২৪ সেপ্টম্বর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
মীর নাছির বলেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ আমাকে বলেছিল, আমি যখন ক্ষমতায় ছিলাম সব বাহিনীর প্রধানরা বলেছিল, আমার পাশে থাকবে। কিন্তু বিপদ যখন আসল, দেখি, আমি ছাড়া পাশে আর কেউ নেই। পুলিশ বাহিনীকে বলতে চাই, বেশি বাড়বাড়ি করবেন না। জোয়ার শুরু হলে কিছু করতে পারবেন না। আমাদের নেতাদের যেদিন নির্দেশ দিব সেদিন আপনাদের কোনো অস্ত্রই কাজে আসবে না। আমরা আন্দোলন করে এই পর্যায়ে এসেছি। আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। আওয়ামী লীগের সাথে কোন আপোষ নাই। বেগম খালেদা জিয়াকে যে অত্যাচার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করা যায় না।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবু্বর রহমান শামীম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়, তাহলে এই সরকারের পরিণতি হবে ভয়াবহ। আওয়ামীলীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিতে নয়, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বন্দুকের নলে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা আবারো বিগত নির্বাচনের মত আরেকটি নির্বাচনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেব না। সারা বিশ্ব আজকে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ রোডমার্চ কর্মসূচিতে সরকার যদি বাধা দেয় তাহলে যেখানে বাধা, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, খেলা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগকে বিদায় নিতেই হবে। বোরখা যদি কিনে না নেন ওই নারায়ণগঞ্জের নেতার কাছ থেকে তাড়াতাড়ি কিনে ফেলুন। দেশত্যাগের জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিন। জনগণ কিন্তু আপনাদের ক্ষমা করবে না। জনগণ প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদ বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিল। আজকে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসা পাওয়া তাঁর মৌলিক অধিকার। কিন্তু জটিল চিকিৎসার পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে নেই। কো্নো সরকার যদি মানুষের মৌলিক অধিকার দিতে না পারে তাহলে তাঁর ক্ষমতায় থাকার কোনো প্রয়োজন থাকে না। কিন্তু এ সরকার বেহায়া নির্লজ্জ সরকার। এ সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে। চুরিচামারি করে আর ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করবেন না। বাংলাদেশের মানুষ বারবার রক্ত দিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে একদফার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে।