শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেব না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) আবারো বিগত নির্বাচনের মত আরেকটি নির্বাচনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেব না। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ রোডমার্চ কর্মসূচিতে সরকার যদি বাধা দেয় তাহলে যেখানে বাধা, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে। আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক দলের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কৃষক দলের প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এড. রবিউল হাসান পলাশ ও মহানগর কৃষক দলের আহবায়ক মোঃ আলমগীরের পরিচালনায় প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।
এসময় মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিএনপি'র প্রতিটি কর্মসূচিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হচ্ছে। জনগণ যেভাবে রাস্তায় নেমেছে এই সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। আর যারা ভোট চুরি, গুম, খুন ও মিথ্যা মামলার সাথে জড়িত ছিল জনগণ তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জনগণ প্রয়োজনে দিনের পর দিন রাজপথে বসে থাকবে। তাই বর্তমান অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা এখন ভয়ের মধ্যে আছে। কখন না জানি কী হয়ে যায়। সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা আবোল তাবোল কথা বলছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কথা বললে লুটপাটে ব্যস্ত আওয়ামী সরকার সংবিধানের দোহায় দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতিপূর্বে বিএনপি ও জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কর্তৃত্ববাদী সরকার এতে কোনো কর্ণপাত করেনি। এমনকি খালেদা জিয়ার পরিবারের লিখিত আবেদনেরও কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে বারবার তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সরকারের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে বয়স্ক এই নারী উন্নত চিকিৎসার অভাবে আজ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ এক সময় অনেক লম্বা লম্বা কথা বলত। কিন্তু এখন তাদের সুর নরম হয়ে এসেছে। কয়েকদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী বলেছিল আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় যাব না। কিন্তু তিনি এখন আমেরিকায় গিয়ে বসে আছেন। আমেরিকায় গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমার ছেলের টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে তো কি হয়েছে? কিন্তু এখন সে টাকা উদ্ধার করার জন্য তদবির করছেন। কিন্তু কোনো তদবিরে কাজ হবে না। বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, এ সরকারকে তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ৯৪ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে ১৭৩ দিন হরতাল করে দেশে অগ্নি সন্ত্রাস করেছিল। আর এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বললে তাদের গায়ে চুলকানি আসে। এখন শেখ হাসিনার যেনতেন প্রকারে আরেকটি নির্বাচন করে ৫ বারের প্রধানমন্ত্রী হবার খায়েশ জেগেছে। কিন্তু দেশের জনগণ সেটা হতে দিবে না।
সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আওয়ামী লীগের এখন শেষ সময়। তাদের পৃথিবীর ছোট হয়ে এসেছে। তারা লাগাতর অন্যায় অত্যাচারের একটা হিমালয় পাহাড় তৈরি করেছে। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শত শত নেতাকর্মীদের গুম করেছে। এসবের বিচার হবে। সময় কিন্তু এসে গেছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডাররা এখন শেখ হাসিনাকে বুদ্ধি দিচ্ছে, আমরা বিএনপিকে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দেব। আপনি শুধু বিদেশীদের সামলান। তাই শেখ হাসিনা এখন শুধু বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতে পায়ে ধরে আরেক বার ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।