‘বিতর্কের অবকাশ নেই, বিষয়টি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ’

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-11-02 21:53:44

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের সাক্ষাৎ পর্বটি ছিল সৌজন্যতার। একাদশ সংসদ শেষ হচ্ছে এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিতর্কের কোন অবকাশ নেই বলে বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিষয়টি পুর্ব পরিকল্পিত ছিল না। হঠাৎ করেই আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে যান ১৬ জন্য সংসদ সদস্য। ওই সময়ে সংসদ ভবনে যারা ছিলেন তারা সকলেই অংশ নিয়েছেন।

সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার আগে অবহিত ছিলেন কিনা, কিংবা পার্টির পূর্বানুমতি ছিল কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বার্তা২৪.কমকে বলেন, যাওয়ার আগে আমাকে ফোন করেছিল। আমি তাদের বলেছি যেতে পারেন সমস্যা নেই।

বুধবার (১ নভেম্বর) মাগরিবের নামাজের পর সংসদ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে তারা সাক্ষাৎ করেন জাতীয় পার্টির ১৬ জন সংসদ সদস্য। পার্টির সংসদীয় দলের নেতা রওশন এরশাদ কিংবা পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে ছাড়াই এই সাক্ষাৎ নিয়ে বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশনারা মান্নান নেতৃত্ব দেন বলে জানা গেছে।

সৌজন্য সাক্ষাৎ পর্বে অংশ নেওয়া একাধিক সংসদ সদস্য জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী তার দপ্তরে যে চেয়ারে বসেন তার সামনে চারটি চেয়ারে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, রওশন আরা মান্নান এবং রুস্তম আলী ফরাজী বসেছিলেন, অন্যরা সবাই দাড়িয়ে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী খুব ব্যস্ত ছিলেন, পাঁচ থেকে সাত মিনিট অবস্থান করেছি। কাজী ফিরোজ, বাবলা এবং রওশন আরা মান্নান কিছু কথা বলেন। নির্বাচন বা রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি। চলতি সংসদে জাতীয় পার্টি একসঙ্গে কাজ করেছে এ কথা আলোচনায় উঠে আসে। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করা হয় বলে জানান ওই সংসদ সদস্য। জবাবে প্রধানমন্ত্রীও বিদায়ী সংসদে জাতীয় পার্টির ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ওই সাক্ষাৎ পর্বে পার্টির শীর্ষ নেতা রওশন এরশাদ, পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, লিয়াকত হোসেন খোকা, শেরিফা কাদের, আহসান আদেলুর রহমান এবং রানা মোহাম্মদ সোহেল অনুপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পার্টি সূত্র জানিয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের ও চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা সংসদে আসেন নি। অন্যদিকে সাদ এরশাদ অধিবেশনে যোগ দিলেও মাগরিবের বিরতির আগেই চলে যান। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের আসনে থাকা জাতীয় পার্টির মোট ২৭ জন সংসদ সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জন যোগ দেন সাক্ষাৎ পর্বে।

জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন জোটের বিষয়ে ঘোষণা দেয় নি। তারা এককভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি, জোট গঠন ইস্যুতে সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের একাধিক সভায় বলেছেন, সময় মতো দেশের জনগণ ও জাতীয় পার্টির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জোটের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সম্প্রতি প্রেসিডিয়াম ও সংসদীয় দলের যৌথসভায় জোট গঠনের বিষয়ে পার্টির চেয়ারম্যানকে একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিএনপির সঙ্গে জোটের পক্ষে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আবার জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের পক্ষে। সে কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরেক দফায় ভাঙনের মুখে পড়তে পারে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের রাজনৈতিক দল এরশাদের জাপা। যে কারণে বেশ বুঝে শুনে পা ফেলতে চাইছে দলটিকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর