হতাশা নিয়েই ঢাকার পথে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা

বিবিধ, রাজনীতি

মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 04:40:25

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে ও ভোট গ্রহণের দিনও তারা অপেক্ষায় ছিলেন কেন্দ্রের নির্দেশনার, কিন্তু পাননি। নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়েও তারা রয়েছেন অন্ধকারে।

কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ অনেকের। নির্বাচনে পরাজয়ের পর নিজেদের ব্যর্থতার কারণ, সাংগঠনিক অদক্ষতা, দূরদর্শিতার অভাব ও সমন্বয়হীনতাসহ নানা অভিযোগ তৃণমূলের। এসব অভিযোগ আর হতাশা নিয়েই ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা।

নির্বাচনে ভরাডুবির পর ফল প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দাবি জানানো হয়েছে, পুনরায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের ৩০০ আসনের প্রার্থীরা। সেই লক্ষ্যেই প্রার্থীদের ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

প্রার্থীরা বলছেন, কেন্দ্রের বিশেষ কোনো দিকনির্দেশনা নেই। কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার মধ্যে প্রার্থীরা যেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সবার উপস্থিতিতে পরবর্তী সিদ্ধন্ত নেওয়া হবে। এছাড়া সকল প্রার্থীকে নির্বাচনের আগে ও পরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, মামলাসহ সকল তথ্য উপাত্তসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও ভৈরব-৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শরিফুল আলম বার্তা২৪কে বলেন, ‘কেন্দ্রের তেমন কোনো নির্দেশনা নেই। আগামীকাল (৩ জানুয়ারি) ম্যাডামের কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। এর বাইরে নির্বাচনের আগে ও পরের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কোনো কিছুই নেই।’

মেহেরপুর সদর-১ আসন থেকে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও ধানের শীষের প্রার্থী মাসুদ অরুন। বার্তা২৪.কমকে তারা জানান, গতকাল (১ জানুয়ারি) ফোন করে বলা হয়েছে আমরা যেন ঢাকায় আসি। সেই নির্দেশনা পেয়ে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছি। তবে কি জন্য ডাকা হয়েছে তা সুনির্দ্দিষ্টভাবে বলতে পারবে না। পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবে দল।

জানা গেছে, একইভাবে চট্টগ্রাম, বরিশাল, নেত্রকোনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়সহ দূরবর্তী অঞ্চলের প্রার্থীরা ঢাকার পথে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছেন। গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক করে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা স্মারকলিপি আকারে নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে ঐক্যফ্রন্ট।

এদিকে ঐক্যফ্রন্টের ডাকার বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পাশাপাশি এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। তাতেও সফল না হলে তারা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তবে কি কর্মসূচি দেবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছন নেতারা। এমনকি একদিন পরেই ইসিতে যে স্মারকলিপি দেয়ার কথা বলা হচ্ছে তা নিয়েও হতাশ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘দলের সামগ্রিক ভাবনা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। বিভেদ বলতে চাই না, সমন্বয়হীনতা তো আছেই। এখন মনে হচ্ছে আত্মসমালোচনার সময় এসেছে। দল এখন যে অবস্থায় রয়েছে তাতে সফল কর্মসূচি পালন কঠিন হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর