‘ভোটের ফল উন্নয়নের পক্ষে জনগণের ম্যান্ডেট’

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

রেজা-উদ্-দৌলাহ্ প্রধান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | 2024-01-12 15:46:47

‘আমি এটাকে কোনো গতানুগতিক ইলেকশন হিসেবে দেখছি না। এ ইলেকশনের মধ্যদিয়ে একটা ম্যান্ডেট নিয়ে শেখ হাসিনা এসেছেন। যেটা চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু যখন ইলেকশনে অংশগ্রহণ করলেন তখন তার কাছে যদিও তিনি মুখে স্বাধীনতার কথা বলেননি কিন্তু কার্যত লোকে বুঝত যে এটা স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেওয়া হচ্ছে। আর এখানে যে রায়টা দেওয়া হল সেটা হল উন্নয়নের পক্ষে।‘

বুধবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিন্টুরোডের বাসায় বার্তা২৪-এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধানকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন ঢাকা-৮ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। আলাপকালে তিনি নির্বাচন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সফলতা, ব্যক্তিগত চাওয়াপাওয়াসহ বামরাজনীতির ভবিষ্যত নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বলতে গিয়ে মেনন বলেন, ‘নির্বাচনে মানুষকে কিন্তু দেখেছি রাস্তায় রেসপন্স করতে। খেয়াল করে দেখবেন যে, এখানে মানুষ ভোট দিতে এসেছে স্বত:স্ফূর্ত হিসেবে। অনেকে বলছে যে ভোটের পার্সেন্টেজ বেশি হয়ে গেছে। কথাটা ঠিক না। তারা নির্বাচনকে দেখেন নি। আমার এলাকায় আমি দেখেছি লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। বিকেলের পড়েও চারটা পাঁচটা বাজে তখনো লোকজন ছিল ভেতরে, চৌহদ্দির মধ্যে। এ নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এটা উন্নয়নের পক্ষে একটা ম্যান্ডেন্ট। অন্যদিকে এখানে জনগণ স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন এবং তারা উৎসবের অংশ হিসেবে দেখেছে।‘

বিরোধীদের প্রত্যাক্ষাণের পরও বিশ্ব নেতারা যেভাবে মহাজোটের বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছে তার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতিকেই কৃতিত্ব দিলেন ১৪ দলের শরিক ওয়াকার্সপার্টির সভাপতি মেনন। তিনি বলেন, ‘আমি তো মনে করি কূটনীতিক হিসেবে শেখ হাসিনা অনেক বেশি দক্ষ এবং যোগ্য। একারণে সমস্তদেশগুলাকে সে তার আপন করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। এখানে চীন আছে ভারতও আছে। একই সঙ্গে চীন-ভারত বিবৃতি দিচ্ছে। যুক্তরাজ্য আছে ইইউ আছে, সৌদিআরব আছে, কাতারও আছে। নিশ্চয়ই তার কূটনীতিক একটা বিজয় সন্দেহ নাই। বিএনপি-জামাত তারাতো প্রচুর টাকা খরচ করেছে লবিস্ট নিয়োগ করে তাতে কোন কাজ হয় নি।‘

বাংলাদেশের বামরাজনীতিকে পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বর্ষীয়ান এই বামরাজনীতিবিদ। তিনি বলেছেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে বাম রাজনীতির যে ধারা আগে ছিল সেধারা পৃথিবীব্যাপী বাম রাজনীতিতে নাই। চীনে যেমন একটা মার্কেট স্যোশালিজম হয়েছে। আপনার ভিয়েতনামেও তাই। যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের দেশে আমরা যদি ক্লাসিক্যাল কায়দায় এগুলো করতে চাই তাহলে হবে না।

কিন্তু আমাদের অন্যান্য বামবোদ্ধারা যারা আছেন তারা এই জিনিসটাকে ক্লাসিক্যালি দেখেন। এরফলে বাম রাজনীতি সেভাবে এগুচ্ছে না। আমরা মনে করি আমাদের দল যে পলিটিক্যাল লাইন দিয়ে আগাচ্ছে তাতে একটা সময় আসলে পরে বাম রাজনীতির শক্তি আরো বৃদ্ধিপাবে।‘

নির্বাচিত এলাকার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে ঢাকা-৮ এর নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতীয় ইস্যুতে আমরা জাতীয়ভাবে কথা বলব। আমার আসনটা হচ্ছে রাজধানীর কেন্দ্র। এখানে ডেভেলপমেন্টের প্রশ্নে যেটা হচ্ছে সেটা কিন্তু খুব কম। রাস্তাঘাটগুলো সংস্কার করা।

গ্যাস,পানি, বিদ্যুৎতের ব্যবস্থা করা, ইত্যাদিগুলো হচ্ছে এই এলাকার মানুষের দাবি। এমনিতে যখন আলাপ করবেন তখন দেখবেন আর কোন দাবি তাদের নাই। হয়ত কোন রাস্তার কাজ শুরু হয়ে আছে, সেটাকে বড় করা। এসব কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের কাজ। কিন্তু লোকে ধরা নয় এমপি হলে পড়ে এই  দায়িত্ব এমপিরও। তো আমরা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কো-অপারেশন করে এই কাজগুলো বাস্তবায়ন করব।

কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আশা করছেন জানতে চাইলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মেনন আরো বলেন, ‘মন্ত্রিত্ব নিয়ে আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। কি পাইনি তার হিসেবে মেলাতে মন না হয় রাজি। আমি কী পেয়েছি কী পাইনি সে হিসেব আমি করি না। আমি আমার কাজটা করি। মাঝে মাঝে হতাশা আসে কাজের ক্ষেত্রে আবার সেটাকে কাটিয়ে উঠে কাজটা ভালোভাবে করি।‘

এ সম্পর্কিত আরও খবর