হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের রেখে যাওয়া জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তায় চরম ধস নেমেছে। পার্টি থেকে এরশাদের নামটাও প্রায় মুছে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসভবনে তার অনুসারী সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ অভিযোগ করেন। নিজেকে পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করার পর এদিন প্রেসিডিয়ামের সদস্যদের বৈঠক ডেকেছিলেন রওশন এরশাদ।
রওশন বলেন, যে দলের লাখ লাখ নেতাকর্মী দক্ষতা ও যোগ্যতায় এখনও সরকার পরিচালনার স্বপ্ন দেখছে, সেই দলটির সাংগঠনিক অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে! পার্টির এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের অগণিত এরশাদ-পাগল নেতাকর্মীর দাবির মুখে কী এক কঠিন পরিস্থিতে জাতীয় পার্টিকে রক্ষার জন্য আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছি, তা আপনারা জানেন!
দায়িত্ব গ্রহণের পর আজ আমি পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য স্তরের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছি। বৈঠকে আমরা জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা ২ মার্চ জাতীয় পার্টির দশম সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু পবিত্র মাহে রমজানের আগে রাজধানীতে নানা আনুষ্ঠানিকতা থাকায় ওই দিনে সম্মেলনের জন্য উপযুক্ত ভেন্যু না পাওয়ায় তারিখ পারিবর্তন করে ৯ মার্চ শনিবার জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের দিন নির্ধারণ করেছি।
তিনি বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে আমি পার্টির সব স্তরের নেতাকর্মীদের জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার সন্তানতুল্য স্নেহের সাংবাদিকবৃন্দ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আপনারা যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, তার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গত ২৮ জানুয়ারি রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। রওশন দাবি করেছেন তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ওই ঘটনার পর জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রওশন এরশাদ পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ওই পদের কোনো সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। পদটি আলঙ্কারিক পদ। জি এম কাদেরকে বহিষ্কার করে রওশন এরশাদ যে নিজেই নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন, একে আমলে নিচ্ছি না।