হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলন নয় বরং আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কয়েকদিন আগে নির্বাচন হয়েছে, উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশে এখন শান্তি দরকার। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য নতুন সরকারের সময় দরকার।
বিএনপি আবার ষড়যন্ত্র করে আজকে মিটিং দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আমরা দেবো না, দেশে আইন-আদালত আছে। আদালত যদি মুক্তি দেয় আমাদের আপত্তি নাই। আন্দোলন করে, সন্ত্রাস করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবেন না।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগামী পাঁচ বছর আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে। তখন আরেকটি নির্বাচন হবে। ক্ষমতায় আসলে সিদ্ধান্ত নেবেন। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড, রাজ্জাক বলেন, আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন থাকবে, শেখ হাসিনা যতদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, বাংলাদেশ নিরাপদে থাকবে। আমরা পেট ভরে খেতে পারবো। শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমরা সংসদে আছি, সরকারে আছি, রাজপথেও আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজপথে একটু বেশি থাকতে হবে, কারণ ওই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি মিলে আবার ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করবে। আপনাদের বলিষ্ট অবস্থানের কারণে অতীতে তাদের কোনও ষড়যন্ত্রই সফল হয় নাই। আজকে বলতে চাই- যেকোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য আমরা আওয়ামী লীগের পতাকা তলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী তারেক রহমানকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না বলেই আদালতের দরজায় যায় না। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে আজকে তাকে (খালেদা জিয়াকে) বাড়িতে মুক্ত মানুষের মতো থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যদি মুক্ত করতে হয় তাহলে আদালতের দরজায় যেতে হবে। অথবা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে হবে। আন্দোলন করে কোনও লাভ নাই। আন্দোলনের হুমকি দেবেন না। পরিষ্কার করে বলতে চাই- আবার যদি সন্ত্রাসের পথে হাটেন, আগুন সন্ত্রাস করেন, দেশ, রাষ্ট্র, জনগণের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করেন দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমরা বার বার বলেছি, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ একমাত্র আইনিভাবেই খোলা আছে। আইনিভাবে লড়াই করেন। আইনি লড়াইয়ে হেরে গেলে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার সুযোগ আছে। আপনারা সেদিকে যাচ্ছেন না। আপনারা সরকারকে অভিযুক্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চান।
বিএনপি আসলে খালেদা জিয়ার সুস্থতা চায় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা চায় এই অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে।
দলটির আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ আজ এবং আগামী দিনেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে এক এবং অভিন্ন আছি। আওয়ামী লীগ হলো ফিনিক্স পাখি। যার কোনও ধ্বংস নাই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।