জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানাচ্ছি, তাদের যৌক্তিক সময় দেওয়া উচিত। বিদেশে টাকা পাচারকারীদের ধরতে কমিশন গঠন করা উচিত।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, যারা ব্যাংক লুট ও লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বিদেশে বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, সেবসব ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিবিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি কমিশন গঠন করা উচিত।
তিনি বলেন, প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। পুলিশ বাহিনীর যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। আন্দোলনে যেসব নেতা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একইসাথে প্রত্যেক পরিবারে অন্তত একজনের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। থানা লুট ও পুলিশ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। রফতানি বাণিজ্যে অগ্রাধিকার, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ফ্রিল্যান্সারদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। দ্রুততার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। পাঠ্য বইয়ের অসঙ্গতি দূর করতে হবে। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রতিষ্ঠান গুলোকে প্রভাবমূক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ সেপারেশনের ব্যবস্থা এবং উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের আইন করতে হবে। বর্তমান সংসদীয় পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসম্যের সৃষ্টি করতে হবে। একজন নাগরিক যেন ২ বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। আবার যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি যেন সংসদ নেতা না হতে পারেন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। গেল ১৫ বছরে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশসহ সবার দুর্নীতির তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনের মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপরোক্ত এবং দেশের রাজনৈতিক শক্তি ও সরকার যদি আরো সংস্কার প্রয়োজন মনে করেন তা সম্পন্ন করে যৌক্তি সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবিও জানান জাতীয় পার্টি মহাসচিব।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যরিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, নাজমা আকতার, আলমগীর শিকদার লোটন, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্মমহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলাল, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।