ফ্যাসিবাদ সরকারের হয়ে প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সৎ পদবঞ্চিতদের দায়িত্ব নিয়ে আসতে নতুন সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফরের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি আমার ছাত্রজীবনে কাজী জাফর আহম্মেদের নাম শুনেছি। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি তখন জাফর ভাই জেলে ছিলেন। একদিন তিনি জেল থেকে বের হয়ে এক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেটি শুনে আমরা অবাক হয়েছিলাম। তার বক্তৃতা শুনে সেসময় অনেকে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন।
দেশের সংকটকাল নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ক্রান্তিকালে আছি। একটি সফল ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার এসেছে। আমাদের এই সরকারের প্রতি আস্থা আছে। এই সরকারের প্রধান সারাবিশ্বের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
তিনি আরও বলেন, ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের পরে এই সরকার এমন একটা নির্বাচন দেবে, যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এতদিন চিন্তিত ছিলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে কোনো কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। তবে রোববার (২৫ আগস্ট) উনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।
তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন কবে নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সঠিক। তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করব প্রধান উপদেষ্টা সে প্রক্রিয়ায় যাবেন। তিনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবেন।
আনসার সদস্যদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, রোববার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে ঘেরাও করে আনসার সদস্যদের পোশাক ব্যবহার একটা গোলযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ছাত্ররা সেটা নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনি সংকেত।যারা পরাজিত তারা এখনও চক্রান্ত করছে, বিজয়কে নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য। আমরা জনগণকে আহবান জানাবো এই বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য।
ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্ররা সব পরিবর্তন করে দিয়েছে। দেশের মানুষ তাই সবসময় ছাত্রদের আলাদা চোখে দেখে। আমাদের স্কুল কলেজে অযথা বল প্রয়োগ করে শিক্ষকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করবেন না।
সবাইকে ধৈর্য ধারণ ধরতে হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যে সরকার এসেছে তারা অবশ্যই কাজ করার জন্য এসেছে। তাদেরকে সে সুযোগ দিতে হবে। আমরা তাদের যৌক্তিক সময় দিতে চায়। এবং তাদের নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে যদি আগের মত অবস্থা সৃষ্টি হয় তাহলে সেটা জনগণ মেনে নিবে না। সেইজন্য জনগণ অপেক্ষা করছে। সেটা হবে যৌক্তিক সময় পর্যন্ত।
স্মরণ সভায় জাতীয় পার্টি সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দেশ শাসন চলেছে। বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী দেশকে ধ্বংস করে দেশ ছেড়েছেন। তার দোসররা এখন দেশকে অস্থিতিশীল করতে আনসার বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী ভারত বিনা নোটিশে বাঁধ খুলে দিয়েছে। এই বন্যাকে আমি আশীর্বাদ মনে করেছি। কারণ বন্যা আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ করেছে।