বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে চাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সময় লাগবে। তবে একটি যৌক্তিক সময় হতে হবে। এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। অতি অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন। একটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। জনগণের প্রতিনিধিদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করার সুযোগ করে দিন।’
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে আয়োজিত মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম রফিকুল ইসলাম মাহতাবের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, অনেকে এই সরকারকে ছাত্রদের সরকার বলছে। কিন্তু এই আন্দোলনে সারাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছে এটা বাংলাদেশের জনগণের সরকার। অনেকে মা-বোন ছাত্রীদের পানি খাইয়ে সহয়তা করেছে। ইউনুস সরকারকে আরও সময় দিতে চাই। অনেকে দাবিদাওয়া দিয়ে এই সরকারকে অতিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে। আনসারা যে কাজ করেছে এটা কোনো আনসার নয়, আওয়ামী লীগ সরকার এদের ট্রেনিং দিয়ে আনসারে নিয়োগ হয়েছে।
তিনি বলেন, উপদেষ্টারা দয়া করে যে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে তাকে ধারণ করুন। নির্বাচনের দিন যে প্রধান কমিশনার ঘুমায়, সেই কমিশন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিলুপ্ত করুন। নইলে গণতন্ত্র আসবে কীভাবে? সাধারণ জনগণের অধিকার যেন আর কেউ খুন্ন করতে না পারে সেজন্য দেশের সকল মানুষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন যে সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা অনর্বর্তীকালীন সরকার হলেও এটা মূলত বিপ্লবী সরকার। ড. ইউনুস বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, তার সরকারকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ভারত সরকারের উচিত খুনিদের ফেরত পাঠানো। সেনবাহিনীর প্রতি আহ্বান ৬২২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করুন। এদেরকে সেনাবাহিনী আশ্রয় দিতে পারে না। তাদের প্রতি আশা, তারা জনগণের পাশে সবসময় থাকবেন। স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করার জন্য সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, যেসব অস্ত্র সেনাবাহিনীর কাছে থাকার কথা সেসব অস্ত্র শেখ হাসিনা মানুষকে দমন করার জন্য পুলিশকে দিয়েছে। মিয়ানমারের বাহিনীরা সীমান্তে এসে মানুষ মেরে চলে যায়। কিন্তু আমাদের বিমানবাহিনীরা কোনো জবাব দেয় না। সেনাবাহিনীকে দিয়ে শুধু ব্রিজ আর বন্যায় ত্রাণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করলে হবে না। আমাদের আগ্রাসী কোনো পরিকল্পনা নাই। দেশের মানুষ বিএনপিকে দায়িত্ব দিলে সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করবে।
মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. সেলিম মিঞার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় মৎসজীবী দলের অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।