বিএনপি’র স্থায়ী কমিটিই ‘নড়বড়ে’

বিএনপি, রাজনীতি

শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 05:44:05

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর ব্যাপকভাবে সমালোচিত বিএনপি। কারণ নির্বাচনের দিন বা আগে-পরে দলটি সরকার বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। অথচ সিনিয়র নেতারা তৃণমূল নেতাদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা কেউই মানেননি। যা দলের স্থায়ী কমিটির ‘নড়বড়ে’ অবস্থার প্রতিফলন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর ৫০২ জনকে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে ১৯টি পদ রাখা হয়। কিন্তু কাউন্সিলের পর থেকেই দুটি পদ শূন্য। পদাধিকারবলে সদস্য হন- চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যরা হলেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আরো জানা গেছে, সদস্যদের মধ্যে খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে কারাগারে, তারেক রহমান গত প্রায় এক যুগ ধরে বিদেশে (লন্ডন), মারা গেছেন এম কে আনোয়ার,তরিকুল ইসলাম ও আ স ম হান্নান শাহ। এছাড়া সালাউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করছেন। আর ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াও বর্তমানে কারাগারে আছেন। তবে বাকি ১০ জনকে সক্রিয় থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান দীর্ঘদিন নিস্ক্রিয়।

দলটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কাউন্সিল ছাড়া কমিটির সদস্যপদ পূরণ করা যায় না। মূলত দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় কমিটির এমন অবস্থা। তবে শুধু স্থায়ী কমিটিতেই নয়, দলের অঙ্গসংগঠনগুলোতেও পদ শুন্য আছে। ফলে এককভাবে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সম্মেলন করতে সাহস পাচ্ছেন না। সবাই চাচ্ছেন খালেদা জিয়াই সম্মেলনটা করবেন।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে দেরি হলে দল কি এভাবেই চলতে থাকবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, ‘যদি তিনি এই মুহূর্তে মুক্তি নাও পান, তাহলে পদগুলো পূরণ করতে হবে। এছাড়া এমন একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে, সাধারণ মানুষ ও দলের সমর্থকরা হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারেন। এজন্য স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা করে প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরে খালেদা জিয়াকে জানাতে হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করে লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কাউন্সিল ছাড়া এসব পদ পূরণ করা সম্ভব না। তাছাড়া স্থায়ী কমিটিতে ১৯ জন সদস্য রাখাটা অনেক বেশি। অন্যান্য দেশে স্থায়ী কমিটিতে এতো সদস্য নেই। তারপরও শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে না কারণ স্থায়ী কমিটি এখন তেমন শক্তিশালী নেই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর