গণহত্যার দায়ে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডির) ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা যাতে বিভিন্ন ডামাডোলে আওয়ামী গণহত্যা ভুলে না যায়। আর গণহত্যার দায়ে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা হবে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বর্তমান সময়টা খুব সতর্কতার সঙ্গে অতিক্রম করতে হবে। ধৈর্য ধরে আমাদের লক্ষ্য পৌঁছতে হবে।তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একটাই দায়িত্ব জঞ্জাল দূর করে অর্থবহ একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্র সংস্কারের দফা আমরা ৩১ দফাতে দিয়েছি। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোন সংস্কার টেকসই হয় না। জনগণের যদি কোন সমর্থন না থাকে তবে সে সংস্কার কোনভাবেই সাসটেইনেবল হয় না।
বিএনপি কোন বিপ্লবী রাজনৈতিক দল নয়, এটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। ৪৭ এর পর থেকে অর্থাৎ পাকিস্তান আমল থেকে এদেশে কোনদিন গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি বলে জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আস্থার জায়গা থেকে বলতে পারি, ইউনূস সরকার সফল হবে। তিনি সমাদৃত। সচেতন হয়ে আপনারা (উপদেষ্টারা) কাজ করবেন। আমরা চিন্তিত তখনই হই, তখনি খটকা লাগে, যখন সরকারে থাকা উপদেষ্টারা কোন কথা বলেন। এমন কোন কথা বলবেন না, এমন কাজ করবেন না যেটি জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, ৪ বছর সরকারের মেয়াদের কথা। এ সব তার বলার কথা না, তারা তো কমিশন গঠন করেছেন, সেই কমিশন প্রস্তাব দিবে, জনগণ গ্রহণ করবে, তারপর না হয় সেটি ৪ বছর না ৫ বছর সিদ্ধান্ত হবে। এমন কাজ তো হাসিনাও করতেন, কোন কিছু তিনি ৪, ৫ বছর আগেই বলতেন। এমন কোন কথা কখনো আপনাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। এমন কথা না বলার অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া জনগণকে কেউ উপস্থাপন করতে পারে না। নির্বাচন দ্রুত হলেই রাষ্ট্র সংস্কার কাজ তাড়াতাড়ি করা যায়। ফাঁক থাকলেই স্বৈরাচারের দোসররা, যারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিপ্লবের সব কিছুকে ধ্বংস করতে, বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে। তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে।
বিদেশি সাংবাদিক, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা আমাকে ফোন করে প্রশ্ন করে ড ইউনূস কি ফেল করছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, তার দিকে তো গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে, আস্থাশীল। আমরা তো দেখছি, তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল।
বাজারের অবস্থা খুব ভালো না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে কথা বলা দরকার। সব সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সবাই মিলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। দেশকে একবারে ফোকলা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
এসময় তিনি জেএসডির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জেএসডি সেই দল যারা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের প্রতিবাদে প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছিল। সেইদিন প্রকাশ্যে এই দলটি আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।