কেয়ামতের ফজরেও আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আর রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহাজাহান চৌধুরী।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে ফটিকছড়ির নাজিরহাট ঝংকার মোড় নাজিরহাট পৌর জামায়াতের উদ্যোগে সীরাতুন্নাবী (স.) মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নবী মুহাম্মদ (স.) যেমন মসজিদের ঈমাম যুদ্ধের ময়দানেও সেরকম সেনাপতি। রাসূলুল্লাহ (স.) বদর ও ওহুদের যুদ্ধে সিপাহসালার ছিলেন। আজকে নবী (স.) কে দুভাগে ভাগ করে ফেলেছি। তাঁর যুদ্ধনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি মানতে অনিহা। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশে তৌহিদী জনতারা নবীর জীবন আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে। বাংলাদেশে এমন লোকও আছে নবী (স.) নামাজ পড়েছে তাই নামাজ পড়ি, রোজা রেখেছে তাই রোজা রাখি কিন্তু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ইসলামকে অস্বীকার করি । অনেকে বলে নামাজ পড়লে হইছে তো সমাজের মধ্যে ইসলাম টানেন কেন, রাজনীতি, অর্থনীতির ও সমাজনীতির মধ্যে ইসলাম টানেন কেন। যারা সেকুলারিজম ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে তারা এসব বলতে পারেন। তারা হাশরের ময়দানে হাউজে কাউসারের পানি পান করতে পারবে না।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ইসলামকে যারা মসজিদে মানে, বাহিরে মানে না রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় মুজিবাদকে বিশ্বাস করেন তারা হাউজে কাউসারের পানি পান করতে পারবে না। বাংলাদেশকে গত ১৫ বছরে জাহান্নামে পরিণত করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। ১৯৭২ সালে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল শেখ মুজিব। সেসময় পার্লামেন্টে দাড়িয়ে শেখ মুজিব বলেছিল আমি জামায়াতে ইসলামীকে দাবাইয়া দিয়েছি। অথচ আজকে শেখ মুজিবের ম্যুরালের উপর বাংলার জনগণ প্রস্রাব করে দিয়েছে। স্কেভেটর দিয়ে ম্যুলারগুলো ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।
জামায়াতে এই নেতা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ওপর হাজারো নির্যাতন করলেও আমাদের নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। শেখের বেটি দাম্ভিকতার সাথেই বলেছিল আমি শেখের বেটি পালিয়ে যাই না। অথচ ৫ আগস্টে ভারতে পালিয়ে প্রমাণ করেছে শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মুদির বেটি। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে এই দেশে হাসিনা ১৮ মিনিটও দাড়াতে পারেনি। এটাই হলো জামায়াতে ইসলামীর কেরামতি। সুতরাং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী হাসিনা সরকারের কাছে মাথানত না করে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা ফাঁসিতে ঝুলেছে। আওয়ামী লীগ কেয়ামতের ফজরেও বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করেছিলেন। ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আগুন দিয়েছেন। মনে করছেন বাংলার তৌহিদী জনতা এদেশের হিন্দুদের মন্দির জ্বালিয়ে দেবে। এ দেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক অরাজকতা করবে না। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। আওয়ামী লীগ ছিল ভোট চোর।
ডা. শফিকের নেতৃত্বে আগামীতে বাংলাদেশে সরকার গঠন হবে বলে জানিয়ে সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, অনেকে মনে করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩০ থেকে ৩৫টা আসন পাবে। যারা মনে করছেন শুনে রাখুন আগামী দিনে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী হবে ডা. শফিকুর রহমান। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সরকার গঠন হবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের পাচার টাকা দেশে এনে দেশের ৯২ লক্ষ যুবককে বিনা সুদে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। হিন্দুস্তান যতই উস্কানি দেখ বাংলাদেশ আমরাই সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করবো। এদেশকে বাঁচাতে এদেশের সার্বভৌমত্বকে বাঁচাতে সকল বেধাবেধ পরিহার করে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করি। নতুন বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে জামায়াত কর্মীদের কাজ করে যেতে হবে। আসুন বৈষম্যহীন ন্যায়, ইনসাফ ও উন্নয়নশীল সম্বৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
ফটিকছড়ি থানা জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর সঞ্চালনায় মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হাটহাজারী থানা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, ফটিকছড়ি থানা জামায়াতের আমির নাজিম উদ্দিন ইমু, ভূজপুর থানা জামায়াতের আমির অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমিন এডভোকেট ইসমাইল গনী, হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শোয়াইব চৌধুরী, এডভোকেট আলমগীর মুহাম্মদ ইউনুছ, সাবেক উপজেলা আমির মাস্টার নাজিম উদ্দিন সিকাদার, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নুর মোহাম্মদ আলকাদেরী প্রমূখ।