বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতীয় কোনো দায়িত্ব যদি আমাদের ওপর আসে তাহলে এই দায়িত্বকে মালিকানা হিসেবে নয়, পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবো। আমাদের নেতাকর্মীদের আগে যে সম্পদ থাকবে, নির্বাচনের পরেও সমান সম্পদ থাকবে। নিজের দিকে না তাকিয়ে জনগণের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের কর্মীদের স্পষ্ট বলা হয়েছে, কারও সম্পদের দিকে তাকানো যাবে না। যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ একটি হোটেলের হল রুমে সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
গত সরকারের আমলে জামায়াত সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, ‘কেন্দ্রীয় অফিসসহ সারাদেশে সাড়ে ১৩ বছর আমাদের অফিস সিলগালা ছিল। এক সেকেন্ডের জন্য অফিসে ঢুকতে পারিনি। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেল কেটেছেন। আমাদের দলকে নির্বাচন কমিশন থেকে অনিবন্ধিত করা হয়েছে। নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে এসে সরকার আমাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এত বড় চাপ অন্য কোনো দল পায়নি।’
তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে ভিন্ন ধর্মের মানুষ কমে যাওয়ার দুটি কারণ রয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো- যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা সম্মানের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। অন্যটি হলো- হয়তোবা জন্মের হারে তারা পিছিয়ে রয়েছেন।'
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘিষ্ঠ মানি না। ছোট্ট একটা দেশ এত ভাগ কিসের। জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। কারণ দেশ বাঁচলে আমরা সবাই বাঁচবো। দেশ না বাঁচলে কেউই বাঁচবো না। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধির মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।’
আমির বলেন, '৫ আগস্ট আমরা সব নেতাকর্মীকে সবধর্মের প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে বলেছি। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে আসতেছি। দুর্গাপূজার সময় আমরা সহযোগিতা করেছি। এখন অনেকে চাঁদাবাজি করে দখলবাজি করে। আমরা কারো সম্পদের দিকে হাত বাড়াতে না করেছি। যেসব দাবি দাওয়া আপনারা করেছেন তা দেখবো।'
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল হক মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারি শাহজাহান আলী, সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজী মহারাজ, সিলেট বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ শ্রীমৎ সংঘ্যানন্দ মহাথের, সিলেট প্রেসবিটারিয়ান মিশনমন্ডলীর সভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, সিলেট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপীকা শ্যাম পূরকায়স্থ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, সিলেট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য, সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রদীপ দেবসহ প্রমুখ।