খালেদা খেতে পারছেন না, দাবি বিএনপির

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 03:53:35

মুখে ঘাঁ হওয়ায় কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুইদিন ধরে স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ।

তিনি বলেন, 'ম‍্যাডামের জিহ্বায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাঁ হয়েছে। মুখের প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তিনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। কোনোরকমে নরম ভাত খেয়ে জীবন ধারণ করছেন।'

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরিবারের সদস্যরা এমনটি জানিয়েছেন বলে জানান, বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান। শনিবার (১৮ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, 'সর্বশেষ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা জানা গেছে ইনসুলিন ব্যবহারের পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। বরং তা বিপদজনক মাত্রায় অবস্থান করছে। যার মাত্রা ১৪-১৮ এর নিচে নামেনি।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, 'খালেদা জিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে এক শোচনীয় পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'কারাগারে অবস্থানকালীন খালেদা জিয়া কক্ষের বাথরুমে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন।‌ নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারণে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ ও বিষণ্নতাসহ মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তার আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, 'মারাত্মক জীবন বিনাশী জীবাণু দ্বারা ফুসফুসে সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। এছাড়া ধারণা করা হয় যে, কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ঙ্কর মাত্রায ভিটামিন ডি ও ক‍্যালসিয়ামের শূন্যতা দেখা দিয়েছে। যা হাড়ের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এমনিতেই অনেক আগে থেকেই তিনি বাম কাধ ও হাতের ব্যথায় ভুগতেন। এখন সেই ব্যথা ডান কাঁধ ও হাতেও সম্প্রসারিত হয়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন।'

জমির উদ্দিন সরকার বলেন, 'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে একটি সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে নির্জন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ওই বছরই ৩১ অক্টোবর নিম্ন আদালত ৫ বছরের সাজা হাইকোর্ট ১০ বছর বৃদ্ধি করে। এর কয়েক মাস পরে নিম্ন আদালত চ‍্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা নামে আরেকটি মামলায় ৭ বছরের সাজা দেয়। এছাড়াও একাধিক বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সমস্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা প্রদানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।

এখন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অধিকার গ্রুপ, মানবাধিকার সংস্থা এমনকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও বেগম জিয়ার মামলাকে সাক্ষ্য-প্রমাণহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়ার অসুস্থতা যাতে চরম অবনতি না ঘটে সেজন্য তাকে অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা জোর দাবি জানাচ্ছি।'

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম প্রমুখ।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর