সরকারি সুবিধা নিতে শুরু করেছেন বিএনপির এমপিরা

, রাজনীতি

শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 12:20:00

বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংসদে যোগ না দেওয়ার দলীয় নির্দেশনা ছিল শুরু থেকেই। তবে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সংসদে যোগ দেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাবেন তারা। তবে বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সবাই এসব সুবিধা না নিলেও কয়েকজন নিতে শুরু করেছেন। কয়েকজন সুযোগ-সুবিধার জন্য আবেদন করেছেন। আবার অনেকে সরকারি দলের সদস্যদের মতো বাড়তি সুবিধা পাবেন কি না, সেটা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সাত সদস্য হলেন—মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪), গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (বগুড়া-৬), মো. আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), জাহিদুর রহমান জাহিদ (ঠাকুরগাঁও-৩), হারুন উর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), উকিল আবদুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। গত ২৪ জুন বগুড়া-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি নেতা গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এখনও শপথ গ্রহণ করেননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একজন সংসদ সদস্যের মাসিক বেতন ৫৫ হাজার টাকা, নির্বাচনী এলাকার ভাতা ১২ হাজার ৫০০ টাকা, সম্মানি ভাতা ৫ হাজার টাকা, পরিবহন ভাতা ৭০ হাজার টাকা, নির্বাচনী এলাকায় অফিস খরচ ভাতা ১৫ হাজার টাকা, লন্ড্রি ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, ক্রোকারিজ, টয়লেট্রিজ কেনার জন্য ভাতা ৬ হাজার টাকা, বাসার টেলিফোন বিল ভাতা ৭ হাজার ৮০০ টাকা এবং শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুযোগ। এছাড়া দেশের মধ্যে বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্বেচ্ছাধীন তহবিল বার্ষিক ৫ লাখ টাকা। এছাড়া সংসদ সদস্যদের জন্য রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় রয়েছে এমপি হোস্টেল। ২০১৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত একজন এমপি প্রতি বছর ৪ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ পেয়েছেন, যা এখনও পাবেন। এসব সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও বিভিন্ন সময় নানা প্রকল্পে প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দের ক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার পান।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান জাহিদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, সব এমপিদের জন্য যে বরাদ্দ থাকে সেটা পাচ্ছি। তবে সরকারি দলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দলীয় সুবিধা থাকে, সেগুলো আমরা পাব না। যেমন- এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রত্যেক এমপিকে ২০ কোটি টাকা দেওয়া হয়, আমরা সেগুলো পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, ‘শুল্কমুক্ত গাড়ির জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু গাড়ির যে দাম সে টাকাও তো আমার পকেটে নেই। এখন গাড়ি কিনতে আমাকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে।'

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, 'এখনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়া শুরুই করিনি, কোন আবেদনও করিনি। তাই কী সুযোগ-সুবিধা পাব সেটাও জানি না। তবে সুযোগ-সুবিধার জন্য আবেদন করব।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিএনপির এক এমপি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এক উপজেলার উন্নয়নের জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএনপির নেতা হওয়ায় সেটা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।’

সংরক্ষিত আসনে বিএনপির এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, 'এখনও আমি কোন সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করিনি, তাই এ বিষয়ে বলতে পারছি না।’

বিএনপির এমপিদের সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সহকারী সচিব আবদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এমপিদের যেসব সুবিধা পাওয়ার কথা বিএনপির সদস্যরাও সেগুলো পাবেন। বিএনপির সংসদ সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাসা বা ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই জন সংসদ সদস্য সংসদ ভবন এলাকায় অফিসের জন্য আবেদনও করেছেন, সেটারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর