রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি ফখরুলের আহ্বান

, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-30 18:28:00

ঢাকা: নির্বাচনে ভরাডুবি ঠেকাতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার জেলে রেখেছে বলে মন্তব্য করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এসময় তিনি নেতাকর্মীদের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি অনুরোধ করবো- ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হন। ঢাকা মহানগরের দিকে সবাই তাকিয়ে থাকে। যখনই প্রয়োজন হয় তখনই যেন আপনারা বেরিয়ে আসতে পারেন।

শুক্রবার (১৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন ভাসানী মিলনায়তনে 'কোটি জনতার মা পর্ব-১’ সিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত মুক্তি দিলেও সরকারের অনিচ্ছায় বিএনপি চেয়ারপারসন মুক্তি পাচ্ছেন না। তিনি নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে জেনেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অত্যন্ত সু-কৌশলে তাঁকে কারগারে আটকে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারাকে নিজেদের ব্যর্থতা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলার একমাত্র স্থান ছিল বিচার বিভাগ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিচার বিভাগকেও এই সরকার কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। আমরা বারবার চেষ্টা করছি, কথা বলছি আন্দোলন করছি। আমাদের অসংখ্য ছেলেরা জেলে গেছে তারপরও আমরা কিন্তু দেশনেত্রীকে বাইরে নিয়ে আসতে পারিনি। এটা একদিকে যেমন আমাদের ব্যর্থতা, অন্যদিকে এতে সরকারের যে ভয়ংকর রুপ, ভয়ংকর চেহারা সেটাই প্রকাশিত হয়েছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়ে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের দিনে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে তারা ভোট ডাকাতি করেছে। 'মার্কিন রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত বলেছেন খুলনা নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিত।' এই নির্বাচন কমিশন তদন্ত করবে না। এই নির্বাচন কমিশন পুরোপুরিভাবে এই সরকারের একটা আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। গাজীপুর এবং খুলনা নির্বাচন নিয়ে বহুবার আমাদের নেতারা গেছেন। তারা কোনো কর্ণপাতই করেননি। নির্বাচনের দিন আমি নিজে কথা বলেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার সঙ্গে কর্মকর্তার সঙ্গে।
এমনকি নির্বাচন কমিশনও এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

খালেদা জিয়াকে ও গণতন্ত্রকে যদি মুক্ত করতে হয় তাহলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই আন্দোলন সেদিনই সম্ভব হবে যেদিন আমরা একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে পারব। এই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য আমাদের দেশনেত্রী আহ্বান করেছিলেন। আমরাও সব সময় বলছি যে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মধ্যেই এই চেপে বসা পাথর সরাতে হবে, দানবকে সরাতে হবে। আজকে সেই দানবকে সরাতে হলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল, সংগঠন এক হয়ে তাদেরকে পরাজিত করতে হবে।

ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, সরকার নির্বাচনের কথা বলছে, সব সময় ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছে। যদি সেখানে বিরোধী দল অংশ গ্রহণ না করে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে, পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে,নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহনযোগ নির্বাচন দিতে হবে। এমনকি দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তা না করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো এক তরফা নির্বাচন করে নিয়ে যাবেন, এ দেশের মানুষ আর সেটা হতে দেবে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-দফতর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন খান উজ্জ্বল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী মনির খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কন্ঠশিল্পী নাসির প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর