সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে এসএম ইয়াসিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয়। গত রোববার (২৫ আগস্ট) জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়।
তৃতীয় দিনে মাত্র একটি ফরম বিক্রি হয়েছে বলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান।
উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত না হলেও ২৪ আগস্ট দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির ঘোষণা দেয় জাপা। একইসঙ্গে ৮ সদস্য বিশিষ্ট পার্লামেন্টারি বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। যদিও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদসহ তার অনুসারী সিনিয়র নেতাদের কারোরই ঠাঁই হয়নি বোর্ডে। এরশাদ জীবিত থাকা অবস্থায় যারা বোর্ড সদস্য ছিলেন তাদের অনেকেরই জায়গা হয়নি বোর্ডে।
জাতীয় পার্টির দলীয় ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ঠিক কয়দিন বিতরণ করা হবে তা চূড়ান্ত করে ঘোষণা করা হয়নি। জাপা মহাসচিব জানিয়েছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠিত পার্লামেন্টারি বোর্ড চূড়ান্ত করবে প্রার্থী।
জাপার দুর্গখ্যত এ আসনে হাফ ডজন প্রার্থী রয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী। এরশাদ পুত্র সাদসহ পরিবারের চার সদস্য সামিল হয়েছেন মনোনয়ন দৌড়ে। একজনতো মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন।
পরিবার থেকে মনোনয়ন দৌড়ে থাকা প্রার্থীরা হলেন- এরশাদ পুত্র রাহগীর আল মাহিসাদ এরশাদ, ভাতিজা (ছোট ভাইয়ের ছেলে) সাবেক এমপি আসিফ শাহরিয়ার, ভাতিজা (মামাতো ভাইয়ের ছেলে) জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার, ভাগনি (মেরিনা রহমানের মেয়ে) মেহেজেবুন্নেছা রহমান টুম্পা।
পরিবারের বাইরে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য শিল্পপতি এসএম ফখর-উজ-জামান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেই বিজয়ী হবেন এমনটা ধরে নিয়ে লবিং-তদ্বীর চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। অনেকেই পার্টির চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন।
মনোনয়ন দৌড়ে সবচেয়ে প্রভাবশালী অবস্থানে রয়েছেন এরশাদ পুত্র সাদ। তার জন্য লবিং করছেন তার মা সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ। বিগত নির্বাচনে কুড়িগ্রাম থেকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন।
রংপুরের এই আসনে মনোনয়ন প্রদানের বিষয়টি পার্টির নতুন চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের জন্য অগ্নিপরীক্ষা মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এখানে একদিকে যেমন রওশন এরশাদ ছেলের জন্য মরিয়া, অন্যদিকে স্থানীয় জাপার বড় একটি অংশ রয়েছে তার বিপক্ষে। আবার ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ারের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বেশ জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।