বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সরকারের কাছে প্লট চেয়ে অন্যায় করেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জাপা'র নেতা কাজী জাফরের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ সব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর অংশ)
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছোটখাটো বিষয় নিয়ে পাগলের মতো ফেসবুকে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনাকে দেখতে হবে মূল লক্ষ্যে আমরা যাচ্ছি কিনা। আমি কার কথা বলছি আপনার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। পত্র-পত্রিকাতেও ড্রাম বাজিয়ে শুরু করেছে রুমিনের বিরুদ্ধে একটি অবস্থান তৈরি করবার জন্য। রুমিন কোনো অন্যায় করেনি। হতে পারে বিষয়টি তার জন্য আনইথিক্যাল হয়েছে। কিন্তু রুমিন জোর গলায় পার্লামেন্টের ভেতরে-বাইরে সবখানেই এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে। সবখানেই গণতন্ত্রের জন্য কথা বলে। খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলে। সুতরাং আমাদের এই চিন্তা ভাবনার লোক যারা আছেন তাদেরকে অনুরোধ করব, দয়া করে আপনারা তার বিরুদ্ধে বা অন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো কমেন্ট করবেন না। এতে ক্ষতি হবে আন্দোলনের। বরং তাকে পরামর্শ দেন কি কি তার করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। যারা মনে করেন একা একাই পারব, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কখনোই এই সমস্ত ফ্যাসিস্ট গভর্মেন্টকে তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কোনো আন্দোলন সফল হবে না যদি জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ না করতে পারি। এটাই আমাদের দায়িত্ব। রাজনৈতিক দল হিসাবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এটাই আমরা মানুষগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করব। যারা গণতন্ত্র চান তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করব। ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে।'
ফিখরুল বলেন, ‘এখন আমাদের বিচারকদের শক্তি নেই যে সরকারের বাইরে গিয়ে ব্যবস্থা নেবে। বিচার ব্যবস্থাকে তারা (সরকার) পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। বিশেষ করে চিফ জাস্টিস সিনহা সাহেবকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার পরে। এই অবস্থা গুলো আগে কখনই দেখেনি। এমনকি পাকিস্তান আমলেও এসব দেখিনি। এখন কঠিন এক সময়। এই সময় ধৈর্য ধরে সঠিকভাবে সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে আমাদেরকে এগোতে হবে।'
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। মুহূর্তেই কথা বললে তো আন্দোলন হয় না। আন্দোলনের জন্য তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হয়, সংগঠন তৈরি করতে হয়, আমরা সেইভাবে মানুষকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমরা সেভাবেই কাজ করছি। কাজী জাফর সাহেব আমাকে একটা শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বারবার বলেছেন, কখনো হতাশ হবে না। হতাশার কোনো জায়গা নেই। সত্যিকার অর্থেই যদি দেশপ্রেমিক হও, গণতন্ত্র চাও, তাহলে যতই কষ্ট আসুক তা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জালাল হায়দার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট পূর্বাচলে নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট দাবি করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন রুমিন ফারহানা। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর নিজের নামে সরকারের কাছে চাওয়া প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করেন রুমিন।