‘ভারতের নাগরিকত্ব আইনে মুসলিম বিদ্বেষ ফুটে উঠেছে’

বিবিধ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 00:42:17

ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িক ও বাংলাদেশ সরকারের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে লড়াই জনগণকে নতুন দিশা দেখাতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বাতিল, অসাম্প্রদায়িকতা ও সমতার দক্ষিণ এশীয় মৈত্রী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে গণসংহতি আন্দোলন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় জোনায়েদ সাকি বলেন, আপনার প্রতিবেশীর ঘরে যখন আগুন লাগে তখন তা আর অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকে না। কারণ, সে আগুন আপনাকেও পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারে। ভারতে যেভাবে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে তাতে স্পষ্টভাবে মুসলিম বিদ্বেষ ফুটে উঠেছে।

তিনি বলেন, বিজেপি সরকার মুসলিম বিদ্বেষী ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। যতই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প সৃষ্টি হয় ততই বিজেপির ভোট পাল্লা দিয়ে বাড়ে। বিজেপি তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট ধামাচাপা দিতে আরও বেশি করে সাম্প্রদায়িকতা ছাড়াবে। কিন্তু আমাদের বিজেপির এই ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না বরং এনআরসি ও সিএএ-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে ধর্ম-বর্ণ পরিচয়ের বাইরে জনগণের যে সংহতি রচিত হয়েছে, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর বিরুদ্ধে সেটাই জনগণকে নতুন করে দিশা দিতে পারে, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নতুন ভবিষ্যতের দুয়ার খুলে দিতে পারে।

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ভারতে বর্তমান বিজেপি সরকার চরম সাম্প্রদায়িক নীতির মাধ্যমে ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ জনগণকে নাগরিকত্বহীন অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডে এটা স্পষ্ট যে, নাগরিকত্ব আইন, কশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল, বাবরি মসজিদ ধ্বংস, নাগরিকপঞ্জি-ই বিজেপির সাম্প্রদায়িক নীতির ধারাবাহিকতা। ভারতের বিজেপি সরকার যে নীতি গ্রহণ করেছে তা শুধু ভারতেই নয় পুরো উপমহাদেশ জুড়ে সম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেবে। যার আঁচ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে পড়তে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, এসব বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা দরকার ও ভারতের সম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে যে শক্ত অবস্থান নেওয়া দরকার তা করতে বাংলাদেশ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বরং তারা ভারতের সম্প্রদায়িক সরকারের লেজ ধরে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের চটানো থেকে বিরত থাকার নীতি নিয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা এনআরসি ও সিএএ এর বিরুদ্ধে ভারতীয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, এই আন্দোলনের ভেতর দিয়ে জনগণের ভেতরে যে সংগ্রামী সংহতির বীজ রোপিত হয়েছে তার মাধ্যমেই দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন রাজনীতি শুরু হতে পারে।

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের সাম্প্রদায়িক এনআরসি ও সিএএ-এর বিরুদ্ধে ছাত্রদের সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলা ন্যাক্কারজনক এবং বাংলাদেশ সরকারের ভারততোষণ নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। সমাবেশ থেকে এ হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা।

সমাবেশে সংহতি বক্তব্য রাখেন লেখক ও শিল্পী অরূপ রাহী। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, মনির উদ্দীন পাপ্পু, জুলহাসনাইন বাবু, কেন্দ্রীয় সদস্য দীপক রায়, অ্যাডভোকেট জান্নাতুল মরিয়ম তানিয়া এবং ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর