‘জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে’

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 03:39:44

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে গৌরব ’৭১ আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক আলোচনা ও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয়। কিন্তু জিয়াউর রহমান ছিলেন আসল রাজাকার। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অনুপ্রেবেশ করেছিলেন। অনুপ্রবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের নামে রাজাকারদের সহযোগিতা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুনেরও মূল পরিকল্পনাকারী। তাই আজ সময় এসেছে— খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার এ বাংলার মাটিতে করতে হবে।

আব্দুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলার জনগণের কারণে তারা ফাঁসি কার্যকর করতে পারেনি। তবে এই ফাঁসি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর এর মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে সেইটার প্রমাণও করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াও নিজামি-মুজাহিদদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। তাই তারও বিচার করা প্রয়োজন।

মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও আনন্দ বিএনপি বিলীন করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের ওই প্রবীণ নেতা বলেন, ’৮১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসছিলেন বলেই আজ নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল অসাধ্যকে সাধন করে যাচ্ছেন।

রাজাকারদের বিচার করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসায় তাদের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। এক এক করে রাজাকারদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হচ্ছে।

সংবর্ধনাপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধারাদের মধ্যে রয়েছেন— কৃষ্ণা রহমান, কল্যাণী ঘোষ, অধ্যাপক মমতাজ বেগম, ফরিদা খানম সাকি, বুলবুল মহলানবিশ, শাহীন সামাদ, পদ্মা রহমান, ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না, ডালিয়া রওশীন, শারমিন মুরশিদ, রমা দাস, হিরন্ময়ী দাস রুনু, মৃণালীনি ওঝা ও কনক প্রভা মন্ডল।

গৌরব ‘৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের পরিচানায় অনুষ্ঠানে আগত নারী মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মুজিবনগর সরকারকে প্রথম গার্ড অব অনার প্রদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এ দেশ স্বাধীন না করলে এই বাংলাদেশের পতাকা পেতাম না। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান অনেক বেশি। নারীরা মুক্তিযুদ্ধে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তারা স্বামী ও সন্তানদের যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও অনেকেই অনেকভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসায় এ দেশে রাজাকারদের ফাঁসি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে নারীদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ আবদুস সামাদ বলেন, দেশে অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। তারা তালিকার বাহিরে আছেন। দেশে মাত্র দুইজন নারী মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পেয়েছেন। আর ৩০০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছেন। এটা কোনোক্রমেই সঠিক নয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তারা জীবন বাজি রেখেই নিয়েছিলেন। তাই তাদের বিশেষ সম্মান দেওয়ার জন্য গৌরব ৭১-কে ধন্যবাদ জানাই। একটি অসম্প্রাদায়িক দেশ গড়তে পারলে লাখো শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন গৌরব ৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ঢাকা কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর