সিটি নির্বাচনে হাত গুটিয়ে জাপা নেতারা

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-21 10:58:43

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। গুটিকয়েক নেতাকে দেখা যাচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে।

প্রচারণায় যারা অংশ নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাসিবুল ইসলাম জয়, মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক ও সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলালকে। তবে জয় ও মোস্তাককে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে ডিএনসিসির ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে। ১৯ জানুয়ারিও কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ মঞ্জুর পক্ষে বনানীর কড়াইল, বনানী বাজার, চেয়ারম্যানবাড়ী ও কাকলী এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে তাদের।

এছাড়া অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের সবাই নিরব ভূমিকা পালন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, অনেক নেতাই গোপনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে নিজেরা না নামলেও কর্মীদের নামিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে। ঢাকা সিটি থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির দুই সংসদ সদস্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। একজন সংসদ সদস্য তার ব্যক্তিগত অফিস ছেড়ে দিয়েছেন নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস করার জন্য। অথচ ওই সিটিতে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী বিদ্যমান। দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন মধ্যম সারির অনেকেই।

গুটিকয়েক নেতাকে দেখা গেছে সিটি নির্বাচনের প্রচারণায়

সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার ভূমিকায় জাপার নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। যদিও তারা সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। পরামর্শ ও কৌশল নির্ধারণে পাশে থাকতেতো বাধা নেই। আবার তাদের ঘনিষ্ঠদের নামিয়ে দিলেও অনেকে সাহস পেতেন। কিন্তু সেখানেও তাদের কোনো সহযোগিতা মিলছে না।

জাতীয় পার্টির মনোনীত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র প্রার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি সাধারণ ভোটারদের সমর্থন সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু এখনও সেভাবে দুই সংসদ সদস্যের সাড়া পাচ্ছি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জাপা নেতা বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, দুই এমপি তাদের ঘনিষ্ঠদের আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার সিগন্যাল দিয়েছেন। যদি তা নাই হবে, তাহলে তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতরা জাপা প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেই কেন? এমনকি কাউন্সিলরদের প্রশ্নেও তারা উদাসীন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে গোপন আতাত করে নিজেদের আগামীর পথ পরিষ্কার রাখতে চাইছেন। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তাদের এমন ভূমিকা ছিল।

স্থানীয় নেতাদের অসহযোগিতার পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবেও নেই কোনো মনিটরিং কিংবা নির্দেশনা। প্রার্থীরা যে যার মতো যেভাবে পারছে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে রঙহীন জাপার সিটি নির্বাচনী ক্যাম্পেইন। লজ্জাজনক ফলাফলের শঙ্কা দেখছেন কেউ কেউ।

এতোদিন জাপার কিছুটা বোধোদয় হয়েছে ১৯ জানুয়ারি সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে প্রধান করে উত্তরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবশ্য কয়েকদিন আগে দক্ষিণেও কমিটি করা হয়েছে। সেখানে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপিকে প্রধান করা হয়েছে। যদিও সেই কমিটি কাগজে কলমেই থেকে গেছে।

দুই সিটিতে কতোজন কাউন্সিলর নির্বাচনে লড়ছেন তার সঠিক তথ্য নেই কারো কাছেই। একটি সূত্র দাবি করেছে উত্তরে সম্ভবত ৩৫ আর দক্ষিণে ২৫ জনের মতো হবে। দুই সিটির মধ্যে শুধু দক্ষিণে মেয়র পদে জাপার প্রার্থী রয়েছে। উত্তরে হায়ার করে প্রার্থী নামালেও বাছাইয়ে বাতিল হয়ে যান। যিনি মাঠে রয়েছেন তারও ত্রাহী অবস্থা।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর