হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া, ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করা ও অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে অযোগ্যদের পদায়নের অভিযোগ তুলে গণপদত্যাগ করেছেন রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির নেতারা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) গণপদত্যাগ পত্রে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
চিঠিতে রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম লিখেছেন, আমি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে জাতীয় পার্টির সাথে যুক্ত রয়েছি। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্যারের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া, ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করা, সাংগঠনিক অদক্ষতাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সকল পদ-পদবি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বর্তমান চেয়ারম্যানের আশেপাশে যারা আছেন তারা অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে অযোগ্যদের পদায়ন করে পার্টির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছেন।
গত নির্বাচনে যে ব্যক্তি ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ‘আম মার্কা’ প্রতীকে রাজশাহী সদর-২ আসনে ভোট করে ৫০ ভোট পায়নি তাকে বানানো হয়েছে কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান। এটি রাজশাহীর জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা যারা নিজেদের অর্থ, মেধা, শ্রম দিয়ে এরশাদের আদর্শ বাস্তবায়ন এবং রাজশাহীতে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করছি। তাদেরকে অবমূল্যায়ন করে দলকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করায় আমরা গণপদত্যাগ করেছি। সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্যারের প্রতি হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে সারা জীবন ভালোবাসা, ভক্তি-শ্রদ্ধা থাকবে। মূলত স্যারের আদর্শ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিচ্যুত হওয়ার কারণেই আমরা গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন বাবু, সিনিয়র নেতা মো. শাহাবুদ্দিন, এস এম বাশারুজ্জামান হীরা, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, মাসুদুল ইসলাম বাবু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, কাফি।
জাতীয় শ্রমিক পার্টি রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইলিয়াছ আলী ইদ্রিস, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার হামিদ শ্যামল, যুগ্ম আইন বিষয়ক সম্পাদক পলাশ হোসেন রাঙ্গা, সহকারী সাধারণ সম্পাদক সান্নান সরদার। জাতীয় যুব সংহতির রাজশাহী জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক যুব সংহতি মো. মুনসুর আলিসহ জাতীয় পার্টি রাজশাহী মহানগরের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা গণপদত্যাগ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিছুদিন আগে জাতীয় পার্টি রাজশাহী মহানগরের সভাপতি সাহাবুদ্দিন বাচ্চু প্রায় অভিন্ন অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন। সবাই জিএম কাদেরর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কমিটি গঠনের পর কানাডা জাপার নেতা নাজিম আহমেদ চিশতী, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ফাইজুল ইসলাম মল্লিকও পদত্যাগ করেছেন।
নতুন কমিটির বিষয়ে নানা রকম অভিযোগ উঠে এসেছে। ২০১৫ সালে মারা গেছেন এমএ হাসান তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এ রকম আরও অনেক অনিয়ম করা হয়েছে। কখনও কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন তাদেরকে শীর্ষপদে, আবার দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন তাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। অনিয়ম নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কমিটি গঠনের পর ঘটেছে হাতাহাতির ঘটনাও। চেয়ারম্যানের একজন উপদেষ্টা পদের বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।