দল ভারি করতে গিয়ে নিজের লোক পকেটে ঢুকাবেন না

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 00:04:19

তৃণমূল থেকে সংগঠন শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিজের দল ভারি করতে গিয়ে নিজের লোক পকেটে ঢুকাবেন না। এতে দলের কোনো লাভ হবে না। নিজের দল ভারি করার জন্য বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলে টানবেন না। তাহলে দল কোনদিন টিকবে না, দল দুর্বল হয়ে যাবে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগের অধীনে সকল সাংগঠনিক জেলা/মহানগর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বিশেষ যৌথ সভায় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দল ক্ষমতায় আছে বলে সাংগঠনিক দুর্বলতা উপলদ্ধি করতে পারছেন না। দল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হলে সরকার কখনই শক্তিশালী হবে না। শক্তিশালী সরকার তখনই হবে যখন আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে। আমাদের কাটতিগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাই পূরণ করছেন।

তিনি বলেন, দল যদি শক্তিশালী থাকে তাহলে যে কোনো পরিস্থিত মোকাবেলা করতে পারব, আমাদের পালিয়ে যেতে হবে না। যার যার জায়গা থেকে অবস্থান নিতে পারব।

নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, দল করবেন নিজস্ব প্রভাব প্রলয় বিস্তার করবেন না। দল করতে গিয়ে নিজের লোক পকেটে ঢুকাবেন না। এতে দলের কোনো লাভ হবে না। দল ভারি করার জন্য বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলে টানবেন না। তাহলে দল কোন দিন টিকবে না, দল দুর্বল হয়ে যাবে। ক্ষমতার সঙ্গে সুবিধাবাদী খড়কুটা, আগাছা পরগাছা তারা প্যারাসাইডরা দলে আশ্রয় নেবে, আমাদের নেতারাও প্যারাসাইডদের আশ্রয় দেন। আমাদের নেতারাও সুবিধাবাদীদের নেতা বানান এই সুবিধাবাদী নেতারা দুঃসময়ে থাকে না। শীতের পাখির মতো মৌসুমী পাখিরাও চলে যাবে।

নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ ঘরে বসে কমিটি করবেন না। কমিটি করতে হলে অবশ্যই সম্মেলন করতে হবে। আর কোনো কমিটি ভাঙতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি লাগবে। কমিটি ভাঙার ক্ষমতা আপনাদের নেই। আপনারা সুপারিশ করতে পারেন। কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত হবে আপনার সুপারিশ যথাযথ কিনা।

যেসকল জেলায় কাউন্সিল হয়নি সেগুলো আগামী এপ্রিল মাস থেকে কাউন্সিল করার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল থেকে কমিটির সময় গণনা হবে। কাজেই তিন বছর পর যখন কেন্দ্রীয় কাউন্সিল হবে তখন কেউ বলতে পারবেন না আমাদের কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হয়নি?

সদ্য শেষ হওয়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন কারচুপিমুক্ত হয়েছে দাবি করে কাদের বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে অনেক শঙ্কা ছিল, অনেক আশঙ্কা ছিল। বিশেষ করে ইভিএমকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রতিপক্ষরা নানাভাবে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছিলেন। বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছিলেন, ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে শান্তিপূর্ণভাবে কারচুপিমুক্ত নির্বাচন হয়েছে। বিরোধী দলের বোঝা উচিত কারচুপি মুক্তি বলেই ইভিএম এর প্রয়োজন ছিল। ইভিএমে কারচুপি বা জালিয়াতির কোনো সুযোগ ছিল না। যদি এরকম সুযোগ থাকত তাহলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার বেশি থাকত। ভোটারের উপস্থিতি ৩০ এর নিচে, যদি সত্যি সত্যি নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হত তাহলে এই নির্বাচনে উপস্থিতি এবং রেজাল্ট ভিন্নতর হত।

নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম নিয়ে তিনি বলেন, যে সংশয় এবং সন্দেহের সৃষ্টি করা হয়েছিল সেটা অনেকেই বুঝতে পেরেছেন। এই নির্বাচনে উপস্থিতি কমের জন্য পরিবহন একটা সমস্যা ছিল, তিন দিন অফিসে ছুটি ছিল যে কারণে অনেকেই দেশের বাড়িতে চলে গেছেন। এরকম কিছু সমস্যা ছিল।

তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে দেশী-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কোনো প্রকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসেনি। এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চারটি আসনের উপ নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছি। প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সর্বাত্মকভাবে অংশ নিতে হবে। সকলের উদ্দেশ্যে থাকবে যাতে ভোটার উপস্থিতিটা বেশি হয়। আমরা বিষয়টা চেষ্টা করে দেখতে পারি। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। ভোটার টান আউটের ব্যাপারে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাও কাজ করেছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সাংগঠনিক দুর্বলতাও ভোটারদের উপস্থিতির মধ্যে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গ্যাপগুলো পূরণ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল অব. ফারুক খান, শাজাহান খান, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর