দেশের অর্থনীতি রক্ষায় স্বল্প, মধ্যম-দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দাবি বিএনপির

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 09:48:56

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে দেশের অর্থনীতি ও জনসাধারণের রক্ষার জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, আমাদের প্রদত্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩% অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল ঘােষণা করতে হবে। শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশােধিত আর্থিক প্যাকেজ প্রদান করতে হবে যেন সকল সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধারণ-ছুটিপূর্ব স্তরে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।

ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার এক সাম্প্রতিক ভাষণে গার্মেন্টসসহ রফতানি শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদির খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণােদনা ঘােষণা করেছেন। রফতানিমুখী শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের বেতনের হিসাব নিলে এ প্রণােদনার পরিমাণ যথেষ্ট নয় বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, দৈনিক মজুরি ভিত্তিক গ্রুপ, অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টর, আত্মকর্মসংস্থানকারী, গ্রামীণ ভূমিহীন কৃষক, কৃষি শ্রমিক, গণপরিবহন শ্রমিক, রােড সাইড ভেন্ডর, সকাল-বিকাল ভিন্ন জায়গায় কাজ করে উপার্জনকারী গ্রুপসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দ্রুত সাহায্য পৌঁছাতে হবে। মহামারির কারণে অঘােষিত লকডাইনে এরা কর্মহীন হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনতিবিলম্বে এদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া অপরিহার্য। এদের কারও কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেও অনেকেরই নাই। স্থানীয় প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে এদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে চাল-ডাল-লবণ-তেলসহ নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রব্য সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতি ও জটিলতা এড়াতে পণ্যসামগ্রীর পরিবর্তে নগদ অর্থ দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, করােনার আঘাত আসার পূর্বেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর, নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞমহল উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। সবচেয়ে বেশি আলােচিত ব্যাংকিং খাত। লক্ষ কোটি টাকার উপর খেলাপি ঋণ। পরিচালক ও ব্যাংকার মিলেমিশে ব্যাংক লুট, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে বিপুল অর্থ লোপাট, মেগা প্রকল্পের প্রকল্প ব্যয় অযথা বৃদ্ধিসহ নানা উপায়ে বিরাট অঙ্কের দুর্নীতি, প্রতি বছর লক্ষ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিদেশে পাচারসহ আকণ্ঠ দুর্নীতি উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। এখন তা আরও ঘনীভূত হবে। আমদানিও নিম্নমুখী। রেমিটেন্স প্রবাহ জানুয়ারিতে নেমে গিয়েছিল ২.৬০%। অর্থনীতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুঁজিবাজার ইতিহাসের সর্বনিম্ন সূচকে নেমে এসেছে। বেকারের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। রাজস্ব সংগ্রহে ভাটা চলছে। সারা বছর যে পরিমাণ অর্থ ব্যাংক খাত থেকে নেওয়ার কথা, প্রথম ৪/৫ মাসেই তার চেয়ে অধিক অর্থ সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। বিনিয়োগের ধারা ঋণাত্মক পর্যায়ে নেমে এসেছে। এক কথায় গােটা অর্থ ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বৈষম্যমূলক তথাকথিত উন্নয়ন, সুশাসনের অভাব এবং আইনের শাসনের অভাবের ঠিক এই সময়ে যােগ হয়েছে করােনাভাইরাসের ছোবল। এই মহামারি থেকে রক্ষা পেতে হলে সকারের পক্ষ থেকে দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর