সনি টিভিতে এই ফাইনালের বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে- ‘ঘুমানো মানা!’ আর আজ রাতের এই ফাইনাল প্রসঙ্গে হাজারো প্রিভিউ’র ভূমিকা জুড়ে এই শব্দটাও থাকছেই-‘আজ ইউরোপের ফুটবলের সবচেয়ে বড় রাত!’
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল ইউরোপের টুর্নামেন্ট হলেও ফুটবল যে পুরো বিশ্বের। আর সেই দাবিতেই আজ শুধু ইউরোপের নয়, পুরো বিশ্বের জন্য বছরের সবচেয়ে বড় ফুটবল রাত!
এই রাতে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বায়ার্ন মিউনিখ ও প্যারিস সেন্ট জার্মেই।
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল বায়ার্নের জন্য ডাল-ভাতের মতোই। এটি তাদের ১১ নম্বর চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। এই ট্রফি জিতেছে তারা পাঁচবার। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এটিই পিএসজি’র অভিষেক।
ফর্ম, অভিজ্ঞতা, বর্তমান র্যাঙ্কিং, বড় দলকে ধসিয়ে দেওয়া এবং বড় ম্যাচে বড় কিছু করে দেখানোর ক্যারিশমার জোসে আজ রাত ১টায় শুরু হওয়া ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখই হট ফেভারিট। সম্ভাবনার নিক্তিতে রোববার রাতের ফাইনালে বায়ার্ন শুরুর আগেই অনেক এগিয়ে থাকলেও মনে রাখতে হবে খেলাটা কিন্তু শুরু হয় রেফারির বাঁশির পরে।
ফুটবলে ফেভারিট তত্ত্ব সম্পর্কে একটা কথা প্রচলিত আছে- ফেভারিট হয়ে মাঠে নামা ভালো, তবে ফেভারিটরাই সব সময় জেতে না। যদি জিততো তাহলে প্রতিবার ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হতো!
পিএসজি কোচ দলের বৈঠকে এই ফেভারিট তত্ত্বের বানী আজ তার খেলোয়াড়দের জোরে জোরে শোনাতে পারেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এই প্রথমবারের মতো খেললেও ফ্রান্সের এই দলটিতে শিরোপা জেতানোর মতো খেলোয়াড়ের অভাব নেই। কাতারের তেল ব্যবসায়ীর মালিকানায় পিএসজিতেও আছে অনেক ম্যাচ উইনার।
বায়ার্ন মিউনিখ ইউরোপের এলিট ক্লাবের একটি। কিন্তু পিএসজি রোববার রাতের ফাইনাল শেষে এলিটদের সেই তালিকায় নিজেদের নাম লেখাতেও বদ্ধপরিকর। আজ রোববারের রাত হতে পারে পিএসজি’র জন্য কয়েক বছরে দলের খেলোয়াড়দের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ খরচ করার বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার আনন্দময় রাত।
দু’দলে তারকার কোনো কমতি নেই। নেইমার, কাইলিয়ান এমবাপ্পে, ডি মারিয়া, মাউরো ইকার্ডি বনাম রবার্ট লেভানদোস্কি, সার্জে ন্যাবরি, থমাস মুলার, জুসোয়া কিমিচ- নামগুলো জানাচ্ছে লিসবনে আজ হেভিওয়েট ফুটবলের লড়াই!
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে ফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ টানা সব ম্যাচ জিতে। ১০ ম্যাচের ১০টিতেই জয়। এগারো নম্বর জয়ের অপেক্ষায় রাতের ফাইনালে নামছে তারা। এই ১০ ম্যাচে সবমিলিয়ে বায়ার্ন গোল করেছে ৪২টি। অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে গড় গোল চারটিরও বেশি! একটু জানিয়ে দেই, এর মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সাকে ধসিয়ে দেয় তারা ৮-২ গোলের উৎসবে। আজ রাতেও কি তেমনই কোনো গোলোৎসবের অপেক্ষায় বায়ার্ন?
দলের এই ৪২ গোলের মধ্যে স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানদোস্কি একাই করেছেন ১৫ গোল। সার্জে ন্যাবরি করেছেন ৯ গোল। দারুণ ফর্মে আছেন বায়ার্নের এই তারকা।
অন্যদিকে উয়েফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭ নম্বরে থাকা পিএসজি চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলছে ১০ ম্যাচে ৮ জয়, একটি ড্র এবং একটি হার নিয়ে। সবমিলিয়ে এই ১০ ম্যাচে পিএসজি করেছে মাত্র ২৫ গোল। গোলদাতাদের মধ্যে ইকার্ডি ও এমবাপ্পে করেছেন পাঁচটি করে গোল।
প্রতিপক্ষ হিসেবে পিএসজিকে খুব একটা পছন্দ করে না বায়ার্ন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্যায়ে এই দুটি দল মুখোমুখি হয়েছে ১১ বার। যে লড়াইয়ে পিএসজি জিতেছে ৫ বার। তিনবার জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বায়ার্ন। শেষবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল দুটি দল ২০১৭ সালে। যেখানে বার্য়ান প্রথম ম্যাচে জিতেছিল ৩-১ এ। কিন্তু পিএসজি ফিরতি ম্যাচেই জয় তুলে নেয় ৩-০ গোলে।
আজ রাতের ফল ?
৩-২, এমন কিছুই হবে!
দলের নাম?
রাতেই জানাই!