বায়ার্ন দ্য বেস্ট!

ফুটবল, খেলা

স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 01:41:22

ফুটবল ম্যাচ বিশ্লেষণে ঢাকার ধারাভাষ্যকারদের একটা বাক্য বেশ প্রিয়-‘ফুটবল হলো গোলের খেলা।’ বায়ার্ন-বার্সার ১১ গোলের কোয়ার্টার ফাইনালে সেই সত্যতা মিলল বেশ।

আর ফাইনালে এসে জানা গেল ফুটবল শুধু গোলের নয়, গোলকিপারেরও খেলা! রোববার রাতের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বায়ার্ন ও পিএসজির গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যয়ার ও কেলর নাভাস জানিয়ে দিলেন এই ফাইনাল স্ট্রাইকারদের নয়, এটি ছিল গোলকিপারদের ফাইনাল।

দুই গোলকিপারের সেই শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ন্যুয়ারই এগিয়ে থাকলেন শেষপর্যন্ত। হাসলেন এবং জিতলেন। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখই ছিল হট ফেভারিট। সেই হিসেব ঠিক রেখেই তারা আরেকবার ইউরোপ সেরা ট্রফি জিতল। রেকর্ড জানাচ্ছে এনিয়ে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল জার্মানির ক্লাবটি। মৌসুমটা কি দুর্দান্তই না গেল বায়ার্নের! বুন্দেসলিগা, জার্মান কাপের পর ইউরোপ সেরার ট্রফি।

সামনের একটা বছর পর্যন্ত বায়ার্ন মিউনিখ ক্লাব গেটে পোষ্টারটা ঝুলবে-‘বায়ার্ন দ্য বেস্ট!’

কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে বায়ার্নের ১১ গোলের উৎসব দেখে সবাই ধরেই নিয়েছিলেন ফাইনালও তাহলে হতে যাচ্ছে গোল আনন্দের রাত। 

সেই সম্ভাবনার পুরোটাই ছিল অবশ্য প্রথমার্ধে। শুরুর এই অর্ধে স্কোরলাইন ৩-৩ হওয়ার অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু গোলপোষ্টে দুই গোলকিপার যে কড়া পাহারাদার। শুয়ে-বসে-কাত হয়ে গোল ঠেকানোর এমন সব চেষ্টাই করলেন ন্যয়ার ও নাভাস। সেই চেষ্টায় ন্যুয়ার শেষ পর্যন্ত সফল হলেন। আর নাভাস মাত্র একবার ব্যর্থ হলেন।

সেই সাফল্যেই বায়ার্ন মিউনিখ আরেকবার ইউরোপের বেষ্ট।

ফাইনালের শুরুতে উভয় দলের খেলা দেখে মনে হলো শরীরের জং ছাড়াতে সময় নিচ্ছে সবাই। ফাইনাল ম্যাচ বলেই দু’দলই বাড়তি নিরাপত্তার ছাতায়। গোল না হোক, কিন্তু আগে গোল খাওয়া চলবে না-এই চিন্তায় কাতর। তা সত্বেও পিএসজি গোলের সহজ সুযোগ একটু বেশি পায়।

এবং বেশি মিসও করে!

মিস বলছি কেন? ওটা তো বায়ার্ন গোলকিপার ন্যয়ারের কৃতিত্ব।

-তাতো অবশ্যই। কিন্তু তিনফুট দূর থেকেও গোলকিপারকে একা পেয়ে আপনি যখন গোল করতে ব্যর্থ হবেন-তখন সেটা তো সুযোগেরও অপচয়!

এই সুযোগের রিপ্লে নেইমার যতবার দেখবেন- আফসোসে পুড়বেন। ততদিনে অবশ্য চোখের জল হয়তো আর ঝরবে না, কিন্তু কষ্টের নিঃশ্বাসে বুকটা জ্বলবে-আহ্ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি!

ফাইনালের আগে কোন কোনায় খবর হিসেবে ছিলেন না কিংসলে কোম্যান। বায়ার্নের সেরা একাদশে তার নাম থাকবে-এমন কোন নিশ্চয়তাও ছিল না। করোনাকালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলা শুরুর পর প্রতি ম্যাচেই বায়ার্ন মিউনিক কোচ হ্যানসি ফ্লিক সেরা একাদশে কোন বদল আনেননি। কিন্তু ফাইনালে এসে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনলেন। ইভান পেরিসিচের জায়গায় ফাইনালে সেরা একাদশে সুযোগ দিলেন কিংসলে কোম্যানকে।

আর সেই কোম্যানের হেডের গোল বায়ার্ন মিউনিখকে এনে দিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি! গত মৌসুমেই পিএসজি ছেড়ে বায়ার্নে এসেছেন কোম্যান। একটু জানিয়ে দেই, কোম্যান কিন্তু ফরাসি। ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার সুযোগ পায় ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। আর সেই ফাইনালেই তাদের হারিয়ে দিলো এক ফ্রেঞ্চম্যানের গোল! যে কিনা আগের বছরেই ছিল পিএসজি’র খেলোয়াড়!

ফুটবল আসলে কতই না রহস্য লুকিয়ে রাখে?

এ সম্পর্কিত আরও খবর