গোলকিপারের হাস্যকর ভুল, বাংলাদেশের বিদায়!

ফুটবল, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 12:06:33

বাংলাদেশ ০ : নেপাল ২

সমীকরণটা সহজ ছিল। ম্যাচে নিদেনপক্ষে ড্র করলেই চলত। কিন্তু নেপালের কাছে বাংলাদেশ হেরেই গেল ২-০ গোলে। এবং সেই সঙ্গে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন শেষ! টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশের বিদায়!

তিন দলের পয়েন্ট সমান হলেও গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় পাকিস্তান ও নেপাল সেমিফাইনালে উঠে এল। আর বাংলাদেশ যথারীতি আরেকবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দর্শক হয়ে গেল!

বাংলাদেশের এই বিদায়ের পুরো দায়ভার নিতে হচ্ছে একজনকে-দলের গোলকিপার শহিদুল আলম সোহেল। ম্যাচের ৩৪ মিনিটের সময় শহিদুল যে শিশুতোষ কায়দায় গোল খেলেন, সেটা অনেক ভুল শুধু দেখা যায় ‘বালক দলের’ ফুটবলে! হাস্যকর কায়দায় গোল! বাংলাদেশের গোলপোস্টের প্রায় ৩৫ গজ দুর থেকে ফ্রিকিক পায় নেপাল। স্ট্রাইকার বিমল গার্তি মাগার শট নেন। সেই শটে খুব যে কোন জোর ছিল তা নয়। সেই শটও যে খুব নিপুণ কিছু ছিল, তাও নয়। সোজা আসা সেই শট গোলকিপার শহিুল মাথার ওপর দু’হাত তুলে ধরতে চাইলেন। কিন্তু একি! বল যে তিনি হাতেই রাখতে পারলেন না! আঙ্গুলে লেগে বল জালে! গো..ও..ল!

এমন গোলকে কি বলা যায়? যেন নেপাল এই গোল করল না, বাংলাদেশ সেটা উপহার দিল নেপালকে! আর সেই মেহমানদারির দ্বায়িত্বটা সুচারুভাবে পালন করলেন দলের গোলকিপার শহিুল আলম সোহেল!

বোকার মতো গোল এমন ভঙ্গিতে গোল হজমের ঘটনা শহিদুলের জন্য অবশ্য এটাই প্রথম নয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নীলফামারীতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক প্রীতি ম্যাচেও এমন একটা ‘গোল উপহার’ দিয়েছিলেন শহিদুল। বলা বাহুল্য সেই ম্যাচেও হেরেছিল বাংলাদেশ।

একই ঘটনা ঘটল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। এবারের ধাক্কাটা আরও বড়। এই গোলেই শেষ বাংলাদেশের ২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন।

গোলকিপারের ভয়াবহ ভুলে গোল হজমের পর অবশ্য ম্যাচে ফিরে আসার জন্য অনেক সময় পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কোচ জেমি ডে’র এই দলের সমস্যা হল গোল করার মতো ফুটবলারই যে নেই একাদশে! শুরুর ৫৫ মিনিট পর্যন্ত নেপালের গোলপোস্টে বাংলাশে মাত্র একটা শট নিতে পেরেছিল। যেখানে নেপাল শট নেয় ৪টি। এর একটি থেকেই পেয়ে যায় তারা সেই উপহারস্বরূপ পাওয়া গোল!

ম্যাচের দ্বিতীয় যে গোলটা পায় নেপাল সেটা ছিল মুলত বোনাস গোল! নির্ধারিত সময়ের খেলার শেষ মিনিটে শ্রেষ্ঠার গোলটা নেপালের জয়ে সীলমোহর এঁকে দিল! সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপাল বরাবরই বাংলাদেশের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ। আঞ্চলিক এই টুর্নামেন্টের পেছনের তিনটি মুখোমুখি লড়াইয়ের তিনটিতেই নেপাল জয়ী।

এবারের সেমিতে খেলতে হলে এই ম্যাচে নেপালকে জিততেই হত। আর বাংলাদেশকে কেবল ম্যাচটা ড্র রাখতে পারলেই চলত। সন্দেহ নেই ম্যাচে কাজটা বেশি কঠিন ছিল নেপালের জন্য। অপেক্ষাকৃত সহজ সমীকরণ ছিল বাংলাদেশের জন্য।

নেপাল কঠিন কাজটা সেরে সেমিফাইনালে উঠার আনন্দে। আর বাংলাদেশ সহজ অংকের সমাধান করতে পারল না। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে আরেকবার ফেল বাংলাদেশ।

আরেকবার টুর্নামেন্টের প্রথম পর্ব থেকে বিদায়। সেই হিসেবটাও জানিয়ে দেই, টানা চারবার!

এ সম্পর্কিত আরও খবর