সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে, তবে প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে সাকিবকে

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 16:03:18

৫ অক্টোবর রাতে মেলবোর্ন ফ্লাইট ধরার সময়ও সাকিব হাসছিলেন। হাসিটা পরিচিত, কিন্তু সেই হাসিতে ছিল দুঃশ্চিন্তার ছায়া। বামহাতের আঙ্গুলে ইনফেকসানটাই যে ছিল বড় চিন্তার কারণ।

১৪ অক্টোবর সকালে মেলবোর্ন থেকে ঢাকা ফেরার ফ্লাইট থেকে নামার পরও সাকিবের মুখে সেই চিরপরিচিত হাসি। তবে এই হাসিতে চিন্তার চেয়ে স্বস্তির ছায়া বেশি! আপাতত বড় সুখবর-কড়ে আঙ্গুলের ইনফেকসান (সংক্রমণ) আর বাড়েনি। নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এতদিন ক্রিকেট নিয়েই সাকিবকে সাংবাদিকদের সামনে বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। কিন্তু এশিয়া কাপের মাঝপথে ইনজুরি নিয়ে দেশে ফেরার পর থেকে প্রসঙ্গ যখন সাকিব; তখন আলোচনা একটাই-ইনজুরির আপডেট!

রবিবার দুপুরে বিমানবন্দরে নামার পরও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাছে প্রথম প্রশ্ন সেটাই-‘ইনজুরির আপডেট জানাবেন?’

সাকিব বললেন-‘আপডেট ভাল। ইনফেকসান নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। সংক্রমণ আরো বাড়লো কিনা বা অন্য কোন সমস্যা হল কিনা- সেদিকে নজর রাখতে হবে। তবে সার্বিকভাবে এখন পর্যন্ত ইনফেকসান নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

ক্রিকেট ব্যাট-বল বাদ। স্পিন-টপস্পিন নিয়েও কোন কথা নেই। ব্যাটিং প্রসঙ্গও আলোচনার বাইরে। ফোকাস শুধু একটাই-কড়ে আঙ্গুলের ইনজুরি ও রহস্যময় ইনফেকসান।

প্রায় বছর পুরানো সাকিবের কড়ে আঙ্গুলের অস্ত্রোপচার করানোর তাগিদ সাকিব দিয়েছিলেন আগস্টের শুরুতেই। সেসময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে এই বিমানবন্দরেই বলেছিলেন-‘আঙ্গুলের পুরানো চোট খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে। এবার এটার অস্ত্রোপচার করাতে হবে।’

তবে শেষমেষ বিসিবির অনুরোধ-উপরোধে এশিয়া কাপে খেলতে গিয়ে সেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত থেকে সাকিব সরে আসেন। সময়টা পিছিয়ে দেন। এবং সম্ভবত সেটা ছিল তার বড় ভুল একটা সিদ্ধান্ত। ইনজুরি নিয়ে খেলা মানেই বিপদকে আরও বড় করে আমন্ত্রণ জানানো। ঢাকায় অ্যাপোলো হাসপাতালে সাকিবের কড়ে আঙ্গুলে জরুরি সার্জারি। ৫০-৬০ মিলিলিটার পুঁজ বের করা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার অসহায়ত্ব। কড়ে আঙ্গুলে বিশাল ব্যানারসাইজ ব্যান্ডেজ। ইনজুরিগ্রস্ত আঙ্গুলে ইনফেকসান। আঙ্গুল আর কোনদিন শতভাগ ঠিক না হওয়ার ভবিষৎ শঙ্কা; এত্তোসব সমস্যা কেন হল? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর একটাই-ইনজুরিতে পড়া সাকিবের আঙ্গুলের চিকিৎসা পদ্ধতিতে গলদ ছিল। যখন যেটা করার কথা ছিল, তখন সেটা করা হয়নি।

ইনফেকসানের কারনেই সাকিবের অস্ত্রোপচারের সময় এখন অনেক পিছিয়ে গেছে। সেই প্রসঙ্গে সাকিব জানান-‘ চিকিৎসক স্পষ্ঠ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে অস্ত্রোপচার করানো যাবে না। চোটগ্রস্ত আঙ্গুলে ইনফেকসান যে আর নেই- সেটা নিশ্চিত হবার পরই অস্ত্রোপচারের তারিখ ঠিক করতে হবে। সেই নিশ্চয়তার জন্যই এই লম্বা সময়ের প্রয়োজন হবে।’

এতসব খবরকে হয়তো দুঃসংবাদই মনে হবে। তবে সাকিব একটা সুখবর শুনিয়েছেন-‘ভাল দিক হচ্ছে সার্জারি না করেও হয়তো খেলা সম্ভব হতে পারে। এখন যেহেতু সার্জারি করার সুযোগ নেই, তাই চিন্তা করছি সার্জারি ছাড়া কিভাবে খেলা যায়। ফিজিওর সঙ্গে বসে এই বিষয়ে পরামর্শ করবো। আসলে মাঠে ফিরে আসার কোন টাইম ফ্রেম নেই। এখন হাতে ব্যথা নেই। হয়তো সামনের মাসেও মাঠে খেলতে পারি!’

এ সম্পর্কিত আরও খবর