মাশরাফি এবং বিপিএল ট্রফি; দুজনে দু’জনার!

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 23:40:42

সবার আগে সাফল্যের সেই পরিসংখ্যান।

২০১২ সাল। বিপিএলের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

২০১৩ সাল। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরেও শিরোপা অক্ষুন্ন রাখলো ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। এই চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কও মাশরাফি।

ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জন্য পরের দুই মৌসুমে বিপিএল মাঠেই গড়ালো না। তৃতীয় আসরে ২০১৫ সালে মাশরাফি বিন মর্তুজা ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স ছেড়ে যোগ দিলেন বিপিএলের নতুন দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিপিএল অভিষেকেই সেবার চ্যাম্পিয়ন। এই দলের অধিনায়কও মাশরাফি বিন মতুর্জা।

অর্থাৎ প্রথম তিন বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি মানে মাশরাফি বিন মর্তুজা। চতুর্থবার এসে বিপিএলের অন্য রূপ দেখলেন মাশরাফি। সেবার ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক হিসেবে বিপিএল জিতলেন সাকিব আল হাসান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি মর্তুজা ফাইনাল থেকে দুরে দাড়িয়ে হাততালি দিয়ে সাকিবকে অভিনন্দন জানালেন।

২০১৭ সাল বিপিএলের পঞ্চম আসর। মাশরাফি এই মৌসুমে দল বদল করলেন। নাম লেখালেন রংপুর রাইডার্সে। টুর্নামেন্টের শুরুটা তেমন ভাল হয়নি মাশরাফির রংপুরের। কিন্তু শেষ হাসিটাও যে তিনিই হাসলেন। ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে রংপুরই চ্যাম্পিয়ন হলো। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে- বিপিএলের পেছনের পাঁচ আসরে চারবারই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উঠেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে! তাও আবার তিন দলের হয়ে। যখনই প্রথমবারের মতো যে দলের নেতৃত্ব নিয়েছেন; সেই দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

-এই সাফল্যের রেসিপি কি? সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা কি এবারো থাকছে?

শুক্রবার, ৪ জানুয়ারি বিসিবি ক্রিকেট একাডেমির মাঠে এই প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক বললেন-‘ গতবারের টুর্নামেন্টটা বাদ দিলে বিপিএল এলেই প্রতিবারই একই রকম চাপ নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে হয় আমাকে; শেষবার চ্যাম্পিয়ন ছিলাম, এবারো সেই শিরোপা ধরে রাখতে হবে। নতুন টুর্নামেন্টে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের সবসময়ে একটা চাপ থাকেই। এই ফরমেটে খুব ভাল দল করলেও যে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাবে-এমন কোন নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। এখন প্রথম ম্যাচ থেকে আমাদের খুব ভালভাবে শুরু করতে হবে। হয়তো শুরুটা খারাপও হতে পারে। তবে ফিরে আসার মানষিকতা রেখেই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বিপিএলের এতগুলো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলাম, সত্যিকার অর্থে বলতে কি এই সাফল্যের জন্য নির্ধারিত বা নির্দিষ্ট কোন রেসিপি, ফর্মুলা নেই। তবে হ্যাঁ, অনেক জায়গা থেকে অনেক খেলোয়াড় এসে দলে যোগ দেয়। সেজন্য টুর্নামেন্টের পুরোটা সময় জুড়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে বন্ডিংটা (বন্ধন) অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’

অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি পুরো দলের মধ্যেই এই বন্ধনের মায়াজাল খুব চমৎকার কায়দায় তৈরি করতে পারেন। যখন বাংলাদেশের গর্বের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে খেলেন, তখনো; আবার যখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নামেন-তখনো সেই চিরচেনা অধিনায়ক মাশরাফি।

তার উপস্থিতিই বদলে দেয় পুরো দলকে। বলা হয়ে থাকে দল ভালো তো অধিনায়ক ভালো। তবে প্রসঙ্গ যখন বিপিএল তখন ক্রিকেটীয় সেই বাক্য কিছুটা বদলে দিতে হচ্ছে-‘মাশরাফি অধিনায়ক মানেই দল চ্যাম্পিয়ন!’

পেছনের পাঁচ আসরে চারবার সেটা প্রমানিত সত্য!

এ সম্পর্কিত আরও খবর